October 24, 2024, 8:21 pm

সংবাদ শিরোনাম :
খুলনা জেলা কারাগারে হাজতি ও কয়েদির সাথে মারামারি ৭ম আন্তর্জাতিক Flight Safety Seminar 2024 এর সমাপনী অনুষ্ঠান বিগত ১ বছরে দুবার ঝড়ে কপাল পোড়েছে কয়রা বাসির দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তবুও নির্বাহী প্রকৌশলী শারমিনকে গাজীপুরে পদায়ন সাবেক কমিশনার হারুনের দাপটে বসত ভিটে ছড়া এক দম্পতি   খুলনা কয়রায় হামলা করে আসামি ছিনতাই, ৫ পুলিশ সদস্য আহত খুলনা পাইকগাছায় বিগত এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৪ আহত ৫৬  কয়রায় এক নারী বাসা বাড়ি কাজ করতে করতে বর্তমানে চা বিক্রি করেই স্বাবলম্বী কয়রা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতির মতবিনিময় সভা  আন্তরজাতকি এয়ারট্রাফকি কন্‌ট্রালারূক্স ডে উদযাপন

শাহজালালে ৫৫.৫১ কেজি সোনা চুরির ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা, গ্রেফতার নেই।

মনির হোসেন জীবনঃ- হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢাকা কাস্টমস হাউজের সংরক্ষিত গুদাম (ভল্ড) থেকে ৫৫.৫১ কেজি সোনা চুরি কিংবা উধাও হওয়ার ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় অবশেষে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। চুরি যাওয়া সোনার বাজার মূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।

এঘটনায় রোববার দিবাগত রাত ১০ টা ৪৫ মিনিটের সময় কাস্টমস প্রিভেনটিভ টিমের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। অজ্ঞাত নামা চোর বা চোরদের আসামী করে এই মামলাটি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামিদের নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করা নেই।
যার মামলা নং ৬ তারিখ- ০৩/০৮/২০২৩। এই মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক কিংবা গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সংলগ্ন কাস্টমস ট্রানজিট গোডাউন (টিজিআর-১), ওয়ার্ড নং ৯৮, সংরক্ষিত এলাকা ঢাকা কাস্টমস হাউসে বিভিন্ন সময়ে জব্দ করা সোনার বার বা অলংকার ঢাকা কাস্টমস হাউজের ভল্টে রাখা হয়। ওই ভল্টে থাকা সোনার ৫৫ কেজি ৫১ গ্রাম সোনা চুরি বা হিসাবে গরমিল রয়েছে। অর্থাৎ সেখানে যে পরিমাণ সোনা সেখানে থাকার কথা, তার চেয়ে ৫৫ কেজি ৫১ গ্রাম সোনা কম আছে কাস্টমসের ভল্টে।

এজাহারে বলা হয়েছে, উধাও হওয়া বা চুরি যাওয়া সোনাগুলো ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে জমা হয়েছিল কাস্টমসের এই সংরক্ষিত গুদামে। বিমানবন্দরে কাস্টমসের ওই সংরক্ষিত গুদাম থেকে সোনা চুরির একটি খবর জানাজানি হয় গত শনিবার রাতে। ওই সময় জানা যায়, গুদামের একটি আলমারি ভেঙে একটি বাক্স চুরি করা হয়েছে। ওই বাক্সে ছিল ১৫ কেজি সোনা, বর্তমান বাজারদরে যার দাম প্রায় ১৫ কোটি টাকা। শনিবার সকাল থেকে রোববার রাত পর্যন্ত হিসাবে বেরিয়ে আসে— ১৫ কেজি নয়, ‍গুদাম থেকে উধাও হয়েছে ৫৫ কেজি ৫১ গ্রাম সোনা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিমানবন্দরে কাস্টমসের গুদামের দায়িত্বে থাকেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদের দু’জন। দীর্ঘদিন ধরে বিমানবন্দরের ওই ভল্টের দায়িত্বে ছিলেন একই পদধারী দুই কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম সাহেদ ও শহিদুল ইসলাম । সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ আদেশে তাদের দু’জনকে বদলি করে একই পদমর্যাদার আকরাম ও মাসুমকে দেয়া হয় দায়িত্ব। এছাড়া এবিসি ও ডি শিফটের কাস্টমস কর্মকর্তা রেজাউক করিম, মো: মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন ও মো: নিয়ামত হাওলাদার (সিপাহি) চুরির ঘটনা ঘটনার দিন রাতে জিঙ্গাসাবাদ করলে তারা সকলে সোনা চুরির বিষয়টি অস্বীকার করেন।

সূত্রগুলো আরো জানান, শহিদুল ও সাহেদ গুদামে সংরক্ষিত সামগ্রীর হিসাব নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত আকরাম শেখ ও মাসুম রানাকে বুঝিয়ে দিতে টালবাহানা করেন। এক পর্যায়ে ঢাকা কাস্টম হাউজের ডেপুটি কমিশনার লুবানা ইয়াসমিন গত ২১ আগস্ট শহিদুল ও সাহেদের বদলির আদেশ গুদামের মূল্যবান সামগ্রী বুঝিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করেন। সোনা উধাওয়ের ঘটনায় এই ৪ জনকেই নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল কাস্টমস, তদন্ত কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যারা। এছাড়া কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় শুল্ক বিভাগ একজন যুগ্ম কমিশনারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তারা চার শিফটে কাজ করেন। সব শিফটে জব্দ করা স্বর্ণ একটি গুদামে রাখা হয়েছিল। স্বচ্ছতার জন্য ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনার একেএম নুরুল হুদা আজাদ সম্প্রতি জব্দ করা স্বর্ণ শিফটের ভিত্তিতে আলাদা লকারে রাখার নির্দেশ দেন। বিভিন্ন শিফটে জব্দ হওয়া স্বর্ণ ওই শিফটের নির্ধারিত লকারে রাখতে বলেন তিনি। পরে গুদামে থাকা স্বর্ণের হিসাব করার জন্য একটি কমিটি করা হয়। ওই কমিটি প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। কাস্টম হাউস ছাড়াও সিআইডি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকটি দল দোষীদের শনাক্ত করতে কাজ করছে। বিমানবন্দরের ভেতরে হারিয়ে যাওয়া ও খুঁজে পাওয়া পণ্য রাখার স্থানের পাশেই কাস্টমসের গুদাম। গুদামটিতে বিমানবন্দরে কর্তব্যরত ঢাকা কাস্টম হাউস, শুল্ক গোয়েন্দা, তদন্ত অধিদপ্তরসহ অন্য সংস্থাগুলোর জব্দ করা মালপত্র রাখা হয়।

আজ সোমবার রাত সোয়া ৭ টায় ডিএমপির বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুল হক মিয়া জানান, শাহজালাল বিমানবন্দরে কাস্টমস হাউসের গোদাম থেকে ৫৫.৫১ কেজি সোনা চুরির ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে এই গতকাল রোববার রাত পৌনে ১১ টায় মামলাটি দায়ের করেন।

তিনি আরো জানান, মামলা অজ্ঞাত আসামিদের নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করা নেই। তবে, কাস্টমস এর পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাও তদন্ত করছেন, পুলিশ ও তদন্ত করছে।

ওসি জানান, প্রাথমিক ভাবে জিঙ্গাসাবাদের জন্য বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে। তবে, গ্রেফতার অভিযান এখনও অব্যাহত আছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন