admin
- Tuesday, October 31, 2017 / 140 Time View
ডেস্ক নিউজ- ঘরের মাঠে অপ্রতিরোধ্য দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারতেই পারে বাংলাদেশ। কিন্তু পরাজয়ের ব্যবধান, ২২ গজে অসহায় আত্মসমর্পণ, দৃষ্টিকটু পারফরম্যান্স বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমিকদের চিন্তার খোরাক যুগিয়েছে। কানাঘুষা হচ্ছে বিরুদ্ধ কন্ডিশনে টাইগারদের খেলার সামর্থ্য নিয়ে।
এমন বিপর্যয়ের কারণ জানতে চাইলে বিশেষজ্ঞরা দেশের বাইরে বিরুদ্ধ কন্ডিশনে লড়াইয়ের সামর্থ্যের কথা বলেন। তাছাড়া নিজেদের চিরাচরিত পেস-বাউন্সি উইকেট বাদ দিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রতিটি ম্যাচেই নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অথচ বাউন্সি উইকেটে খেলার মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই দেশ ছেড়েছিলেন মুশফিক-তামিমরা। টেস্টে সাকিব ছিলেন বিশ্রামে। ইনজুরিতে পড়ে তামিম একটি টেস্ট খেলেছেন। পরে ব্যথা বাড়লে একটি ওয়ানডে খেলেই দেশে ফেরেন তিনি। ইনজুরির কারণে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পারেননি বোলিংয়ে বড় ভরসা মুস্তাফিজুর রহমান। তামিম-মুস্তাফিজদের হারিয়ে দল হিসেবে পারফর্ম করতে পারেনি বাংলাদেশ।
সদ্য সমাপ্ত সফরে পরাজয়ের ব্যবধানগুলো হতাশ করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। প্রথম টেস্টে ৩৩৩ রানে হার। পরের টেস্টে ইনিংস ও ২৫৪ রানে হার। তিন ওয়ানডেতে যথাক্রমে ১০ উইকেটে, ১০৪ রানে ও ২০০ রানে পরাজয় বরণ করে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে ২০ রানে ও ৮৩ রানে হেরে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করেছে সফরকারীরা। আগের ম্যাচের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরের ম্যাচে যেখানে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা সেখানে অবিশ্বাস্যভাবে প্রতিটি ম্যাচেই পরাজয়ের ব্যবধান আগেরটির চেয়ে বড় হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ভরাডুবির কারণ জানতে চাইলে গতকাল জাতীয় দলের সাবেক সহকারী কোচ ও সাকিব আল হাসানের গুরু সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা যদি একটা ম্যাচ হারতাম, দুইটা ম্যাচ হারতাম তাহলে ধরে নিতাম কোনো মানসিক সমস্যা আছে। কিংবা অন্য কোনো সমস্যা আছে। কিন্তু আমার মনে হয় যেহেতু ধারাবাহিকভাবে প্রতিটা ম্যাচই খারাপ খেলেছি, তাহলে আমাদের মানতে হবে ওই ধরনের কন্ডিশনে খেলার মতো সামর্থ্য আমাদের কম আছে।’
অভিষেক টেস্টের কোচ সরোয়ার ইমরান দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের ব্যর্থ মিশন সম্পর্কে বলেন, আমরা দুই বছর ঘরের মাঠে বেশিরভাগ ম্যাচ জিতেছি। বাইরে জিতিনি তেমন। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে একটা টেস্ট জিতেছি। বাইরের পারফরম্যান্স ভালো না আমাদের। ক্রিকেটারদের আরও সময় লাগবে।’
বর্ষীয়ান এ কোচের মতে, দেশের বাইরে ম্যাচ জিততে লাগবে সত্যিকারের ফাস্ট বোলার। তিনি বলেন, ‘ওইসব কন্ডিশনে গিয়ে ম্যাচ জিতলে হলে আমাদের মানসম্পন্ন ফাস্ট বোলার লাগবে। দুঃখজনক হলেও সত্যি, ওই মানের পেস বোলার আমাদের নেই। ওই কন্ডিশনের জন্য ফিটনেস লাগে, পাওয়ার লাগে অনেক। আমরা স্পিন দিয়েই সবাইকে কাবু করতে চাই। ওইসব দেশে এটা সম্ভব নয়।’
এর আগে ২০০৮ সালে মোহাম্মদ আশরাফুলের নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেছিল বাংলাদেশ। নয় বছর আগের মতো এবারও জয়শূন্য বাংলাদেশ। এমন পারফরম্যান্সের কারণ সম্পর্কে আশরাফুল বলেন, ‘আমরা অনেক হালকভাবে নিয়েছি সিরিজটা। আমাদের এতদিন ধরে যেভাবে সফলতা চলে আসছিল তাতে সিরিয়াসনেস কম ছিল। যেমন সাকিবকে বিশ্রাম দেয়া। তারপর তামিমের ইনজুরি, মুস্তাফিজের ইনজুরি, দুটি টেস্টে কোচ ও মুশফিকের মাঝে একটা দূরত্ব ছিল মনে হয়েছে। খেলোয়াড়দের সংবাদ সম্মেলন ছিল আনাড়ি।’
এসব প্রতিকূলতার মাঝেও আরেকটু সম্মানজনক পারফরম্যান্স আশা করেছিলে সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান। তিনি বলেন, ‘যে উইকেট ছিল তার কারণেই খারাপ লাগছে। বোলাররা ভালো করবে না এটা জানা ছিল। যে মানের ব্যাটসম্যান ওরা, ওদের বিরুদ্ধে এত ফ্ল্যাট উইকেটে বোলিং করা অনেক কঠিন আমাদের বোলারদের জন্য। তবে আমাদের ব্যাটসম্যানদের আরও ভালো করা উচিত ছিল।’