October 22, 2024, 3:33 pm
তামান্না আক্তার হাসিঃ হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স পরিচয়ে কোভিড-১৯ এর জাল সার্টিফিকেট বাণিজ্য চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
র্যাব বলছে, বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় এসে করোনার ভুয়া সার্টিফিকেটের নামে প্রতারণা করতো চক্রটি। ঢাকায় অবস্থান করতো তিন থেকে চার দিন। সংগ্রহ করতো টেষ্টের কপি।বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হতো জাল কোভিড-১৯ সার্টিফিকেটের টাকা।
র্যাব জানায়, বাংলাদেশ হতে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত বিদেশগামী সাধারণ যাত্রীদের এই দুর্বলতার সুযাগ নিয়ে একটি প্রতারক চক্র বেশ কিছুদিন যাবৎ বিদেশগামী যাত্রীদের জিম্মি করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল।
সোমবার (১৫মে) দুপুরে র্যাব-১ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
তিনি বলেন, মহাখালী কোভিড-১৯ হাসপাতালের সামনে বিদেশগামী যাত্রীদের মােবাইল নম্বর সংগ্রহের উদ্দেশ্যে প্রতারক চক্রের কতিপয় সদস্যরা অবস্থান করছে।
তিনি বলেন, রাজধানীর বনানী থেকে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কোভিড-১৯ এর সা্টিফিকেট নিয়ে বিদেশগামী সাধারণ যাত্রীদের সাথে প্রতারণাকারী প্রতারক চক্রের ৭ সদস্য গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলো-কোভিড-১৯ এর সার্টিফিকেট নিয়ে প্রতারণাকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য জসিম উদ্দিন (২৮), মােঃ তারেকুল ইসলাম (২৬), মােঃ আলমগীর হােসেন (২০), মােঃ রিপন মিয়া (২৮), মােঃ আরিফুল ইসলম (২০), আহম্মেদ হােসেন শাহাদাৎ (১৮) ও মােঃ শামীম হােসেন (৩০)।
এসময় তাদের কাছ থেকে ৬ পাতা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া ভূয়া কোভিড-১৯ টেষ্টের পজেটিভ এবং নেগেটিভ সার্টিফিকেটের ফটোকপি, ২টি বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদান প্রদানে ব্যবহৃত সিম কার্ড, ৩টি প্রবাসীদের
মােবাইল ন্বর সম্পিত টোকেন, ১টি পেনড্রাইভ (যার মধ্যে আসামীদের ডাক্তার, স্টাফ ও নার্স হিসেবে পরিচয় দিয়ে টাকা, ১ টি ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম কার্ড, ৮ টি মােবাইল ফোন, ২টি হাতঘড়ি ও ২টি চশমা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কতিপয় ব্যক্তি সাধারণ বিদেশীগামী যাত্রীদের ভূয়া কোভিড-১৯ এর সার্টিফিকেট প্রদানের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকজন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
তিনি বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিদেশগামী সাধারণ যাক্রীদের কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট একটি আবশ্যিক বিষয়। যে সকল বিদেশগামী যাত্রী কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টফিকেট প্রদর্শন করতে পারবেনা তারা বিদেশ যাত্রা করতে পারে না। বাংলাদেশ হতে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত বিদেশগামী সাধারণ যাত্রীদের এই দুর্বলতার সুযাগ নিয়ে একটি প্রতারক চক্র বেশ কিছুদিন যাবৎ বিদেশগামী যাত্রীদের জিম্মি করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল।
র্যবের এই কর্মকর্তা বলেন, বিদেশগামী যাত্রীদের জিম্মি করে কোভিড-১৯ সাটিফিকেট সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়ে সমাধান করার কথা বলে বিভিন্নভাবে প্রলু্ধ করে প্রতারনামূলকভাবে বিকাশের মাধ্যম ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক জানায়,এই প্রতারক চতক্রটি গত কয়েক মাস যাবৎ সাধারণ বিদেশগামী যাত্রীদের হয়রানি করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা একটি সংখবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। এই চক্রের সদস্যরা বিদেশগামী যাত্রীদের নিকট নিজেদের কোভিড-১৯ হাসপাতালের ডাক্তার, স্টাফ ও নার্স পরিচয় দিয়ে তাদের বিশ্বস্থতা অর্জন করত। পরবর্তীতে যাত্রীদের কোভিড-১৯ এর ভূয়া সারটিফিকেট প্রদান করে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত।
এই চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন সাৰত পরস্পর যোগশাজে একে অপরের সহযোগাতায় রাজধানীর বনানীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বিদেশগামী যাত্রীদের নোভিড-১৯ এর সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সমস্যার বিষয় সমাধান করার কথা বলে বিভিন্নভাবে প্রলুন্ধ করে
লােকজনের নিকট হতে প্রতারনামূলকভাবে টাকা হাতিয়ে নেয় মর্মে স্বীকার করে। দ্রুত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রত্রিয়াধীন।