October 22, 2024, 5:59 pm

সংবাদ শিরোনাম :
খুলনা পাইকগাছায় বিগত এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৪ আহত ৫৬  কয়রায় এক নারী বাসা বাড়ি কাজ করতে করতে বর্তমানে চা বিক্রি করেই স্বাবলম্বী কয়রা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতির মতবিনিময় সভা  আন্তরজাতকি এয়ারট্রাফকি কন্‌ট্রালারূক্স ডে উদযাপন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ আতিকুল ইসলামকে গ্রেফতার ১৯তম জাতীয় ফার্নিচার মেলা শুরু রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় কেশবপুরে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ৮৯ টি মন্ডপে  দুর্গা পূজা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হলো  ঋণখেলাপি তারেক চৌধুরী অপকর্মের শেষ কোথায়।অবৈধ ক্ষমতার দাপটে গড়ে তুলেছেন ক্যাডার বাহিনি বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় তিন গৃহকর্মী গ্রেফতার, ৩১ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন বেবিচক চেয়ারম্যান

কয়রায় এক নারী বাসা বাড়ি কাজ করতে করতে বর্তমানে চা বিক্রি করেই স্বাবলম্বী

আব্দুল্লাহ আল কওছারঃ খুলনা কয়রায় বাসা বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করা বাঘবিধবা হালিমা খাতুন এখন কয়রা বাজারে চায়ের দোকানের ব্যবসা করে উপার্জন করছে। ঘুচেছে আর্থিক দৈন্যতা, বেড়েছে সামাজিক সম্মান। সমাজের নানা শ্রেণী পেশার মানুষের মুখে তার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প।

সমাজের নানা আচার অনুষ্ঠানে তাঁকে দাওয়াত হচ্ছে । তাঁর এই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পের কারিগর উপকূলের সেচ্ছাসেবী সংগঠন ইনিশিয়েটিভ ফর কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট (আইসিডি)। আইসিডি সুন্দরবন তীরবর্তী উপকূলীয় জনপদের সংগ্রামী নারীদের পুনর্বাসনে কাজ করছে। এই প্রকল্পে সহায়তা করছে ‘লিটিল কাইন্ডনেস মেক্স এ বিগ ইমপ্যাক্ট’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

হালিমার খাতুনের দোকানে চা খেতে খেতে শওকত হোসেন শেখ বলেন, হালিমার দুঃখ কষ্টের দিনগুলো আমরা চোখের সামনে দেখেছি, এখন সেই স্বাবলম্বী। আমরা অনেক খুশী তার জীবনের এই পরিবর্তন দেখে। হালিমা খাতুন বলেন, প্রতিদিন চায়ের দোকান থেকে ভালো আয় হচ্ছে।

ঠিকমতো দু মুঠো ডাল ভাত খেতে পারি, এবং আয়ের ক্ষুদ্র অংশ সঞ্চয় করছি। এলাকার মানুষ এখন সম্মান করে। আমার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প এখন মানুষের মুখে শুনতে ভালো লাগে। বাসা বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে কোনোরকম দু’মুঠো ভাত খেতে পারতাম। হার্টের সমস্যা কারণে ভারি কাজ করতে পারি না বলে ঝিয়ের কাজ হারাই। চরম দুশ্চিন্তায় আর হতাশার মাঝে আইসিডি আমার পাশে দাঁড়িয়েছে।

সংগ্রামী হালিমা খাতুনের বাড়ি সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নে ২০০৭ সালে হালিমা খাতুনের স্বামী আলমগীর হোসেন গাজী সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে নিহত হয়। তার সাথে থাকা সঙ্গীরা স্থানীয়দের খবর দিলে অনেক খোঁজাখুঁজি করে দুই দিন পরে খুঁজে পায় আলমগীরের লাশ, ততক্ষণে শরীরের কিছু অংশ খেয়ে ফেলে বাঘে।

পরে বাঘের মুখ থেকে উদ্ধার করা ক্ষতবিক্ষত শরীরের কিছু অংশ বাড়িতে এনে কবর দেওয়া হয়। তখন তিনি ৭ মাসের অন্তসত্বা। একমাত্র সন্তানের মুখ তাঁর পিতা দেখে যেতে পারেনি। স্বামীর মৃত্যুর পর জীবনে অবর্ণনীয় কষ্ট নেমে আসে। শশুর বাড়ি নির্যাতন ও অভাব অনটন সহ্য করতে না পেরে খুলনা শহরে চলে যায় কাজের সন্ধানে। ঝালের মিলে কাজ করতে গিয়ে মেশিনে কাপড় জড়িয়ে মর্মান্তিকভাবে আঘাত পায়।

১ মাস হাসপাতালে থাকার পর মিলের কাজ হারিয়ে তখন রেল লাইনে শাক সবজি বিক্রি করত। অভাব লেগে থাকত বলে মেয়েকে নিয়ে শহর থেকে গ্রামে চলে আসে। কয়রা উপজেলায় ছোট একটা ঘর ভাড়া করে বাসা বাড়ি ও হোটেলে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালায়।

হার্টের সমস্যার কারণে ভারী কাজ না করতে পারায় সেই কাজ হারায়। তার এই কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে আইসিডি। আইসিডি’র কো-ফাউন্ডার মোঃ আশিকুজ্জামান বলেন, হালিমা খাতুনের মতো আরো অনেক সংগ্রামী নারীকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নিয়েছি। যারা এই উদ্যোগে সংগ্রামী নারীদেরকে আর্থিক সহায়তা করছেন তাদেরকে অনেক কৃতজ্ঞতা।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন