October 27, 2024, 4:14 pm
তামান্না আক্তার হাসিঃ র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের নৃশংস ও ঘৃণ্যতম অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। ধর্ষণের মতো ঘৃণ্যতম অপরাধ নির্মূলের জন্য র্যাবের প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে নারী ও শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ বাসযোগ্য সমাজ তথা দেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী তার পিতা-মাতাসহ সাভারের রাজাবাড়ী এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়টিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছে। অন্যদিকে আসামী একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র শাখার স্থানীয় ইউনিয়ন সভাপতি। আসামীর রাজনৈতিক কার্যালয় ভিকটিমে বাসার কাছাকাছি হওয়ায় ভিকটিমের সাথে গত সেপ্টেম্বর ২০২১ সালের দিকে প্রথম পরিচয় হয় আসামী সোহেল রানার সাথে। রাস্তায় যাতায়াতের বিভিন্ন সময়ে ভুক্তভোগীকে অনৈতিক আকার-ইঙ্গিত প্রদর্শন করত অভিযুক্ত। এক পর্যায়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয় ওই কিশোরীকে। ভিকটিম তা প্রত্যাখ্যান করলে গত অক্টোবর ২০২১ সালে জোরপূর্বক সোহেল রানার ভাড়া করা ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে এবং এ সময় অশালীন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখে সোহেল রানা। সেই ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এত দিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিল অভিযুক্ত ছাত্রনেতা সোহেল রানা। ভিকটিম অস্বীকৃতি জানালেও ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জিম্মি করে ওই ভুক্তভোগী কিশোরীকে। গত ১৪ ফেব্রæয়ারি ২০২২ তারিখে আসামী ভিকটিমকে তার সাথে সময় কাটানোর প্রস্তাব করলে ভিকটিম তা প্রত্যাখান করে বিয়ের ব্যাপারে পরিবারের সাথে কথা বলতে বলেন। সোহেল রানা তাকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেন। গত ১৫ ফেব্রæয়রি আসামী ভিকটিমের গতিরোধ করে একই কায়দায় জোরপূর্বক ফ্ল্যাটে নিয়ে ধর্ষণ করে। এতে ভিকটিম অসুস্থ হয়ে পরলে বাসায় এসে ভিকটিম আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ভিকটিমের মা আত্মহত্যার কারণ জানতে চাইলে বিষয়টি খুলে বলে ভুক্তভোগী। পরে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে সভার মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত ঘটনায় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস্ মিডিয়াসহ এলাকায় চাঞ্চল্যে সৃষ্টি হয়। ফলশ্রæতিতে র্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল পুলিশের পাশাপাশি আসামী গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা সংবাদ ও স্থানীয় সোর্সের সহায়তায় জানা যায় যে, আসামি সোহেল চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে, র্যাব-৭ এর সহযোগিতায় র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল গত অদ্য ২৭ ফেব্রæয়ারি ২০২২ তারিখ ভোর ০৪.৫৫ ঘটিকার সময় চট্টগ্রাম শহর থেকে উক্ত চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামী মোঃ সোহেল রানা (২৭), জেলা-ঢাকা’কে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী সোহেল ভিকটিমকে বিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে তার ভাড়াকৃত ফ্ল্যাটে নিয়ে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে। ভিকটিম বিয়ের কথা বললে আসামী না করে এবং সাভার থেকে পালিয়ে চট্টগ্রামে আত্মগোপনে চলে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতে এইরুপ অপরাধীদের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর অভিযান অব্যাহত থাকবে।