December 25, 2024, 4:59 am
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ইচ্ছা আপাতত নেই। আমরা এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার বিষয়ে ভাবছি না। যতদিন সম্ভব আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে চাই।
দিপু মনি বলেন, আজকে আমাদের পরামর্শক কমিটির সভা রয়েছে, সেখানে আমরা সার্বিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করবো। আমরা যেমন একদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চাই না, ঠিক তেমনই সবার স্বাস্থ্য বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে যদি বন্ধ করতে হয় তাহলে অবশ্যই আমরা বন্ধ করবো।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর অদূরে আশুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির নবম সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল জানিয়ে সভাপতির বক্তব্যে ডা. দীপু মনি বলেন, সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী এতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হয়েছে। তাই সরকার আর নতুন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চায় না। এ কারণে শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রমের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষাকে দক্ষতা ও প্রযুক্তি নির্ভর হিসেবে গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, সামনের দিনগুলোতে নতুন কারিকুলাম শুধু পরীক্ষা ও সনদ নির্ভর শিক্ষাকার্যক্রম হবে না, শিক্ষার্থীদের দক্ষ, যোগ্য, আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষার অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজন হলে অবশ্যই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ইচ্ছা আপাতত সরকারের নেই। আমরা এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার বিষয়ে ভাবছি না। যতদিন সম্ভব আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে চাই।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু আরো বলেন, করোনা সংক্রামণ বাড়লে শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতিটাই সবচেয়ে বেশি হবে। সন্তানদের কথা মাথায় রেখে আমাদের প্রত্যেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গত দুই বছরে আমাদের অভিজ্ঞতা ছিল মার্চ মাসের দিকে করোনা বাড়ে। কিন্তু এ বছর করোনার সংক্রমণ জানুয়ারিতেই শুরু হয়ে গেছে। আমাদের সবাইকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
তবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার সতর্ক থাকার কথা বলেছেন। আমরা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবো।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নিজের ব্যক্তিগত মতামত উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি বলেন,
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া উচিত। এটা একান্ত আমার মতামত। তবে তা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়। আমরা আমাদের দিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বসতে চাই। শুধু পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা না, বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব নিয়ম চালু আছে আমরা যদি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সেই মানে উন্নীত করতে চাই তবে, সে বিষয়েও কিছুটা অগ্রগতি হয়তো হবে।
১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের করোনা প্রতিরোধী টিকা দেওয়ার বিষয়ে কোনো চিন্তাভাবনা আছে কি না- জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখনো ১২ বছরের কম বয়সীদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আপাতত তাদের টিকা দেওয়া হবে না।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী (এমপি), বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ । এছাড়া অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ভারতীয় সমাজ সেবক কৈলাস সত্যার্থী, স্বাগত বক্তা ছিলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডঃ মোঃ সবুর খান।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ লুৎফর রহমান, উপ উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার কোষাধক্ষ্য মোঃ মমিনুল হক মজুমদার রেজিস্ট্রার অধ্যাপক প্রকৌশলী ডক্টর এ কে এম ফজলুল হকসহ বিভিন্ন বিভাগের ডিন, শিক্ষক- শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন ।
এসময় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজন কমিটি সূএে জানা যায়, এবারে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্প্রিং ২০২৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়কালে ব্যাচেলর অফ মাস্টার্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১০৩৪৩ জন স্নাতক ও ১৮২৫ জন স্নাতকোত্তর মোট ১২১৬৮ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী ১২ জন গ্রাজুয়েটকে স্বর্ণপদক প্রদান করেন।
এছাড়া এবছর থেকে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি দুটি নতুন স্বর্ণ পদক প্রবর্তন করেছে। সেগুলো হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী স্বর্ণপদক এবং শেখ মুজিবুর রহমান স্বর্ণপদক। তার মধ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পদক্ষেপের দুইজন এবং শেখ মুজিবুর রহমান স্বর্ণপদক পাবেন ২ জন শিক্ষার্থী। পরে শেষ বিকেলো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।