December 23, 2024, 7:56 pm
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজায় জঙ্গি হামলার কোনো হুমকি নেই বলে মন্তব্য করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) এম. খুরশীদ হোসেন।
জঙ্গিদের মনিটর করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো নাশকতার পরিস্থিতি মোকাবিলা র্যাব সদা প্রস্তুত রয়েছে। যারা ঘর ছেড়েছে তারা নজরদারিতে আছে।
অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন বলেন, তবে, আমরা আত্মতৃপ্তিতে ভুগছি না। জঙ্গিদের যে কোনো নাশকতা নস্যাৎ করে দিতে র্যাবের কমান্ডো টিম ও হেলিকপ্টার প্রস্তুত রয়েছে।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় রাজধানীর ২৭ নং রোড সংলগ্ন বনানী মাঠে গুলশান – বনানী সার্বজনীন দুর্গাপূজা উপলক্ষে (পূজামণ্ডপ) ও র্যাব ফোর্সের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব ডিজি একথা বলেন
র্যাব মহাপরিচালক এম. খুরশীদ হোসেন বলেন,ভার্চুয়াল জগতে যে কোনো গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধে র্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম পর্যবেক্ষণ করছে। যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য ডগ স্কোয়াডকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পূজামণ্ডপসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্যুইপিং পরিচালনার পাশাপাশি র্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, র্যাব স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো টিম ও র্যাবের এয়ার উইংয়ের হেলিকপ্টার প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিমা বিসর্জনের দিন র্যাবের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন থাকবে।
গোয়েন্দা ও সাইবার তথ্য বিশ্লেষণ করে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের জঙ্গি হামলার তথ্য পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারপরও আমরা আত্মতৃপ্তিতে ভুগছি না। জঙ্গিদের যে কোনো নাশকতা নস্যাৎ করে দিতে র্যাব বরাবরের মত প্রস্তুত রয়েছে।
এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের হুমকি নেই। আমরা সাইবার মনিটরিং করছি। গোয়েন্দা নজরদারি অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি আছে।
র্যাব প্রধান এম. খুরশীদ হোসেন বলেন, হিন্দু সাম্প্রদায়িকের ওপর কোনোরূপ হামলা, পূজামণ্ডপ ভাঙচুর বা পূজার উপকরণাদি ভাঙা, ডাকাতি, চুরি ইত্যাদি সংগঠিত হলে তাৎক্ষনিকভাবে তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব ডিজি জানান, দুর্গাপূজায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এরআগে র্যাব মহাপরিচালক পূজামণ্ডপে উপস্থিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুর্গাপূজা উদযাপন করার পরামর্শ দেন। গত ১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম উৎসব দুর্গাপূজা। আগামী ৫ অক্টোবর শুভ বিজয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ পূজা।
পূজা মণ্ডপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন বলেন, জঙ্গিরা যতো স্মার্টই হোক না কেন, র্যাব আরও স্মার্ট। আমি আশ্বাস দিতে চাই, র্যাব আগের চেয়ে আরও বেশি স্মার্ট হয়েছে। ওরা যতো স্মার্টই হোক কোনো ধরনের সফলতা পাবে না।
তিনি আরও বলেন, ৫০ থেকে ৬০ জন যুবক ঘর ছেড়েছে। যারা ঘর ছেড়েছেন তাদের মনিটরিং করা হচ্ছে। পূজার শেষে কিছুদিনের মধ্যে ভালো কিছু রেজাল্ট আমরা দিতে পারবো। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।
র্যাব ডিজি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা সবাই কাজ করে যাচ্ছি। এখানে সব ধর্মের, বর্ণের মানুষ যেন তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে পারে সেজন্য র্যাব ফোর্সেসসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বদা সজাগ রয়েছে।
র্যাব সূত্রে জানা যায়,র্যাবের ব্যাটালিয়ন গুলো নিজ নিজ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে তাদের অধিক্ষেত্রে স্থানীয় পূজা কমিটি, জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রাখছে। র্যাব সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুমের (কন্ট্রোল রুমের হটলাইন নম্বর : ০১৭৭৭৭২০০২৯) মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপগুলো সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমেও মনিটরিং করা হচ্ছে। সব মেট্রোপলিটন শহর, জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। সব মেট্রোপলিটন শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরসমূহে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে।
এছাড়া ইভটিজিং যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পূজা মণ্ডপসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে আগত নারীদের ইভটিজিং/যৌন হয়রানি রোধকল্পে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বনানী পূজামণ্ডপ ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনকালে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস্), অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন), , পরিচালক (লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান, অধিনায়ক র্যাব-১, র্যাব সদরদপ্তরের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, গুলশান – বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশন এর সভাপতি শ্রী পান্না লাল দত্ত ও সাধারন সম্পাদক প্রাণকৃষ্ণ ঘোষসহ অন্যান্যরা এসময় উপস্হিত ছিলেন।