October 27, 2024, 6:32 pm

সংবাদ শিরোনাম :
কেশবপুরে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে  দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা ব্যবসয়ী এম শরীফ উদ্দিনের নামে মিথ্যা মামল প্রত্যাহার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন কালীগঞ্জে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও বাতাসে উঠতি আমন ধানের ক্ষতি  দক্ষিণখানে নকশা বহির্ভূত ভবন নির্মাণ করায় রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান খিলক্ষেত কুরাতুলি ট্রাকের বেপরোয়া কান্ডে পুলিশ নিহত  শুধু ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে আমরা সন্তুষ্ট নয়;সকল অঙ্গ-সঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত ডেঙ্গু প্রতিরোধে দক্ষিণ খান বিএনপি’র ভিন্ন রকম ক্যাম্পেন  শেখ হাসিনাকে ৫৭ বার ফাঁসি দিলেও ক্ষতি পূরণ হবে না: সেলিম উদ্দিন। টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সভায় আ’লীগ নেতাসহ ৯ জনের সদস্যপদ বাতিল পাইকগাছায় ঘুর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে অসহায় দিনমজুর সহিলের মাথা গোজার ঠাইটুকু হারিয়ে ফেলেছে

প্রতিবন্ধী সন্তানের গলায় রশি বেঁধে টেনে টেনে ভিক্ষা করেন মা

ডেস্ক নিউজ ॥

প্রতিবন্ধী সন্তানের গলায় রশি বেঁধে তা টেনে টেনে ভিক্ষা করেন এক অসহায় মা। বছরের পর বছর এভাবে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন এই মা। প্রতিবন্ধী সন্তানের গলায় রশি বাঁধার বিষয়টি অমানবিক হলেও তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি কেউ। সন্তানের গলার রশি টেনে টেনে প্রতিদিন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ভিক্ষার জন্য ছুটে যান তিনি।

তবে ছেলের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত এই মা। এ অবস্থায় ছেলের চিকিৎসা করাতে চান তিনি। একই সঙ্গে প্রতিবন্ধী ছেলের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করে যেতে চান এই মা। এজন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার শৈলাডহর গ্রামের প্রতিবন্ধী জাকির হোসেনের মা জামেনা খাতুন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিবন্ধী ছেলে জাকিরের গলায় রশি বেঁধে দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ভিক্ষা করেন মা জামেনা খাতুন। তাদের বাড়িঘর নেই। অন্যের বাড়িতে বসবাস করেন তারা। প্রতিদিন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ছুটে যান বেঁচে থাকার তাগিদে। ভিক্ষা করে যা পান তা দিয়ে চলে তাদের সংসার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রবণশক্তিহীন ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেয় জাকির হোসেন। জন্মের কিছুদিন পর বাবাকে হারায় জাকির। এরপর জীবিকার তাগিদে একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলের গলায় রশি বেঁধে গ্রামে গ্রামে ভিক্ষা করেন মা।

জাকিরের মা জামেনা খাতুন বলেন, প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মেছে জাকির। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। স্বামীর মৃত্যুর পর চলতে পারছিলাম না আমরা। এজন্য সন্তানের গলায় রশি বেঁধে ভিক্ষা করতে নামি। ভিক্ষা করে যা পাই তা দিয়ে মা-ছেলে খেয়ে বেঁচে আছি। মাঝেমধ্যে রশি ছিঁড়ে ছুটে যায় জাকির। তখন পাগল বলে মানুষে মারধর করে। আমি মরে যাওয়ার পর ছেলের কি হবে তা নিয়ে চিন্তিত। ছেলের চিকিৎসার জন্য সবার সহযোগিতা চাই আমি।

প্রতিবেশীরা জানায়, জাকিরকে বাড়িতে বেঁধে রেখে গেলে রশি ছিঁড়ে চলে যায়। পথে ঘাটে মানুষে মারধর করে। জাকিরের মা এভাবে রশিতে বেঁধে ভিক্ষা করলে সবার খারাপ লাগে। পশুর মতো ছেলের গলায় রশি বেঁধে নিয়ে যায় মা। আমরা সাধ্যমতো সহযোগিতা করি। ঘরবাড়ি নেই। থাকার জায়গা নেই। অন্যের বাড়িতে থাকে মা-ছেলে। আপন বলতে তাদের কেউ নেই। তাদের সহযোগিতায় কেউ এগিয়ে এলে অসহায় মা-ছেলের একটা ব্যবস্থা হতো।

দুর্গাপুর উপজেলার দক্ষিণ ভবানিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর মাহমুদ বলেন, প্রতিবন্ধী ছেলে ও তার মাকে প্রায়ই দুর্গাপুরে দেখা যায়। বিষয়টা খুবই অমানবিক। প্রতিবন্ধী ছেলের গলায় রশি বেঁধে ঘোরানো খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। অসহায় মা-ছেলের পাশে বিত্তবান এবং সবার দাঁড়ানো উচিত। তাহলে এই অমানবিক ঘটনা থেকে মুক্তি পাবে প্রতিবন্ধী ছেলেটি।

দুর্গাপুর সার্কেলের এএসপি মাহমুদা শারমিন নেলী বলেন, বিষয়টি শুনেছি। খুবই অমানবিক ঘটনা। আমরা সাধ্যমতো অসহায় মা-ছেলের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব। যে বয়সে ছেলেটি মায়ের দায়িত্ব নেয়ার কথা সে বয়সে মাকেই ছেলের দায়িত্ব বহন করতে হচ্ছে। সবাই এগিয়ে এলে দুর্দশা কেটে যাবে তাদের।

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা খানম বলেন, জাকির হোসেনকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়া হয়। আমি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য কিছুটা সাহায্য করেছি। আমরা জাকির ও তার মাকে সরকারি সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করব।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন