December 23, 2024, 8:17 pm
তাছলিমা তমাঃ সাম্প্রতিক সময়ে অনেকগুলো ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর হত্যা ঘটনার দ্রুততম সময়ে নিম্পত্তি করে র্যাব সাধারণ জনগনের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
হত্যাকারী সুমন পেশায় একজন ট্যাক্সি চালক। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা মুরাদ নগরে হলেও প্রথম স্ত্রী শিমু ও দেড় বছরের ছোট মেয়ে এবং মা সহ ডিএমপি, তুরাগ থানাধীন রানাভোলা নামক স্থানে ভাড়াটে হিসাবে বসবাস করতেন। আনুমানিক দেড়/দু’বছর পূর্বে এই নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার বিলকিস(২৬)’কে তার অভিভাবকের অগোচরে বিয়ে করেন এবং রানাভোলা থেকে আনুমানিক দুই কিলোমিটার দূরে নয়াপাড়া নামক স্থানে অন্য একটি বাসা ভাড়া করে রাখেন। উবারে গাড়ী চালনা করে স্বল্প আয়ে তাকে দুটি সংসার চালানোর দায়িত্ব নিতে হয়। গত তিন/চার মাস যাবৎ দ্বিতীয় স্ত্রী বিলকিস তার নিকট একটু বেশী টাকা দাবি করা শুরু করে ফলে উভয়ের মধ্যে তিক্ততা শুরু হয়। এক পর্যায়ে হত্যাকারী সুমন তার দ্বিতীয় স্ত্রী বিলকিস কে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে। মাঝে মধ্যে সে বিলকিস কে নিয়ে পূর্বাচল এলাকায় ঘুরতে যেতেন এবং সুযোগ খুঁজতেন।
ভিকটিম’কে হত্যার উদ্দেশ্যে গত ১৯ মে দুপুরের পর সে (সুমন) তাঁর স্ত্রী বিলকিস কে নিয়ে পূর্বাচল এলাকায় ঘুরতে যায়। পথি মধ্যে চা পান করে এবং জায়গা ও সুযোগ খুঁজতে থাকেন। বিকাল আনুমানিক ৪ টার পর ২৪ নং সেক্টরে একটি জঙ্গল এলাকায় নিয়ে যান। জায়গাটা খুবই নিরিবিলি দেখে সেখানে গাড়ী থামান। বিলকিস গাড়ীতে বসে থাকে এবং আসামী সুমন গাড়ী হতে বের হয়ে পাইপ দিয়ে পেট্রোল বের করে একটি বোতলে ভরে। গাড়িটি তখনো স্টার্ট অবস্থায় ছিল। কিছুক্ষণ পর বিলকিস গাড়ি থেকে বের হয়। তৎক্ষনাৎ সে (সুমন) বোতলের পেট্রোল বিলকিস এর গায়ে ছিটিয়ে দেয় এবং ম্যাচের কাঠি জ¦ালিয়ে দ্রুত গায়ে ছুঁড়ে মারে। আগুন দাউ দাউ করে জ¦লে উঠে। বিলকিস বাঁচার জন্য জোরে জোরে চিৎকার শুরু করে। হত্যাকারী পাষন্ড সুমন গাড়ি নিয়ে দ্রুত সরে পড়ে। বিলকিসের ডাক চিৎকারে আশে পাশের লোকজন ছুটে আসে এবং বিলকিস কে একটি ড্রেনের মধ্য হতে উদ্ধার করে প্রথমে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত তাকে শেখ হাসিনা বার্ন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন ২০ মে সকাল আনুমানিক ০৯০০ ঘটিকায় অসহ্য পোড়াযন্ত্রনা নিয়ে ভিকটিম মারা যায়। ঘটনার পর ঘাতক সুমন আতœগোপনে চলে যায় । পরবর্তীতে এই হত্যাকান্ডের আসামী’কে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব-১ এর আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামী গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
গত ২১ মে ২০২৪ তারিখ আনুমানিক বিকাল ১৮০০ ঘটিকার সময় র্যাব-১ এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, উক্ত ঘটনার হত্যাকারী পাষন্ড স্বামী সুমন(২৮) গাজীপুর জেলার বাসন থানাধীন এলাকায় আতœগোপনে আছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ এর আভিযানিক দলটি গাজীপুর জেলার বাসন থানাধীন নাওজোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই হত্যাকান্ডের পাষন্ড স্বামী আসামী মিজানুর রহমান সুমন(২৮), পিতা-মফিজুল ইসলাম, থানা-মুরাদ নগর, জেলা-কুমিল্লা‘কে গ্রেফতার করা হয়।
এ হত্যাকান্ডের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা রুজু প্রক্রি
য়াধীন।