December 22, 2024, 5:16 pm
সুধীর চন্দ্র দাশ,স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রথমবারের মতো আয়োজিত আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে ড. শিপন দাশ (নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক) ভবিৎষতে ট্রান্সজেনিক সি৪ ধানের জাত উদ্ভাবন সম্পর্কে আলোচনা করেন। সেই বলে যা বর্তমান উপলব্ধ ধানের জাতের তুলনায় ৫০% বেশি ফলন দিতে পারে। প্রকৌশলী চাল হবে সি৪ ধান। ধান একটি সি৩ উদ্ভিদ, কারণ এটি সাধারণত সি৩ সালোকসংশ্লেষণ অনুসরণ করে।সি৪ সালোকসংশ্লেষণের তুলনায় সি৩ সালোকসংশ্লেষণ কম কার্যকর। যদি ধানে সি৪ সালোকসংশ্লেষণ স্থাপন করা যায়, তাহলে ধানের ফলন ৫০% বৃদ্ধি পেতে পারে। তিনি ইতিমধ্যে কয়েকটি সি৪ সালোকসংশ্লেষণ জিন এর নিয়ন্ত্রক উদ্ভাবন করেন, যা সি৪ ধানের জাত উদ্ভাবন করতে অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে। তার এই গবেষণা কয়েকটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রবন্ধে প্রকাশিত হয়েছে।
ড. শিপন দাশ, পিতা-শিক্ষক হরি শংকর দাশ (যিনি চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্টাতা প্রধান শিক্ষক) মাতা-.মিনতি দাশ, অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা। তিনি ছোটবেলায় থেকে মেধাবী ছিলেন। ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এস এস সি পাস করেন।২০০৫ সালে সরকারি সিটি কলেজ, চট্রগ্রাম থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচ এস সি পাস করেন। ২০০৬-২০০৭ সেশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োটেকনোলজি বিভাগে ভতি নিয়ে সাফল্য সহিত (বি. এস. সি) পাস করেন। উন্নত গবেষণার তীব্র আগ্রহের ফল সরূপ জার্মান সরকারের “স্কলারশিপ প্লাস “নামেপূর্ণ ফান্ড বৃত্তি পেয়েছিলো এবং ২০১৪ সালে ইউনিভার্সিটি অফ বন, জার্মানি এম. এস.সি পাস করেন। ২০১৮ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ডুসেলডর্ফ”, জার্মানি ও মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা যৌথ কলাবরেসন থেকে (আইজিআরএডি-প্ল্যান্ট গ্রাজুয়েট প্রোগ্রাম) পি. এইচ. ডি (ডক্টরেট ডিগ্রী) নেন।২০১৯ সালের জানুয়ারি – মার্চ মাসে ডুসেলডর্ফ বিশ্ববিদ্যালয়, জার্মানিতে পোস্টডক্টরাল রিসাচ ফেলো হিসেবে কাজ করেন।
২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের “ল্যাঙ্কাস্টার ইউনিভার্সিটিতে পোস্টডক্টরাল পদের জন্য গৃহীত। কিন্তু সে সময় দেশের সেবা করার জন্য মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়।
বর্তমানে তিনি এনএসটিইউ এর বায়োটেকনোলজি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে, চিকিৎসা, কৃষি এবং মাইক্রোবায়োলজিক্যাল সেক্টরে সরকারি অথয়ানে বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনা করছেন। তিনি আরো বলেন সম্প্রতি, আমার গবেষণা দল ডায়াবেটিস নিয়ে দুটি আন্তর্জাতিক গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। আমরা দেখেছি যে সিএপিএন১০ এবং এসএলসি৩০এ৮ জিনের কিছু নির্দিষ্ট মিউটেশনের সাথে ডায়াবেটিসের বিকাশের দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও আমরা বায়োইনফরমেটিক্স ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সারের জন্য দায়ী মূল জিনগুলি খুঁজে বের করার জন্যও কাজ করছি। আমরা ইতিমধ্যে একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছি যেখানে আমরা রিপোর্ট করেছি যে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের অগ্রগতির সাথে ম্যাপ্ট জিনের দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। এই ম্যাপ্ট জিন ভবিৎষতে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার নির্ণয় এ একটি বায়োমারকার হিসেবে কাজ করতে পারে।
কৃষি খাতে ও আমরা নামকরা “সায়েন্টিফিক রিপোর্ট” জার্নালে একটি নিবন্ধও প্রকাশ করেছি। আমরা কিছু মূল জিন খুঁজে পেয়েছি যা টমেটোতে খরা প্রতিরোধ এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই তথ্য দিয়ে আমরা খরা প্রতিরোধী টমেটোর জাত উদ্ভাবন করতে পারি। নেদারল্যান্ড এ একটি পত্রিকাই আমাদের এই গবেষণা প্রকাশ করেছে।