December 25, 2024, 4:27 am

সংবাদ শিরোনাম :
দৌলতপুর এক রিক্সাচালকের মরদেহ উদ্ধার পোরশায় সাদিয়ানী কতৃক মানুষ হত্যার প্রতিবাদে গণপ্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এয়ারপোর্ট ইমার্জেন্সি এক্সারসাইজ-২০২৪ অনুষ্ঠিত জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তবর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে:উত্তরা পূর্ব থানা কর্মিসভায় আমিনুল হক পারিবারিক কলহের জেরে আপন ভাই কর্তৃক জলিল হত্যা মামলার পলাতক আসামি সাগর (২০) কে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ ও র‍্যাব-৭ লাখো মুসল্লির অশ্রু সজল নয়নে আমিন-আমিন ধ্বনীতে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিন দিনের ইজতেমা কালীগঞ্জে ফেন্সিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী জামিনী কান্ত, গ্রেফতার  ২৯০০ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ডিবি-গুলশান সিভিল এভিয়েশন একাডেমিতে ICAO CAA Approval of Training Organizations (ATO) Course এর সমাপনী অনুষ্ঠিত খুলনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে একজন নিহত

গ্রেনেড হামলার আগে নেত্রীকে সাবধান করেছিলাম: সাইদ খোকন।

ডেক্সঃ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে গ্রেনেড হামলার আগের রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে একটি হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করার দাবি করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন।

‘২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা, স্মৃতির পাতা থেকে জানা অজানা দুটি কথা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে শুক্রবার তিনি এ কথা বলেন।

১৫ বছর আগের নারকীয় এই ঘটনাটি আবার স্মৃতিতে তাজা হয়ে উঠেছে হামলার বার্ষিকী সামনে রেখে। শনিবার নানা আয়োজনে নিহতদের স্মরণ করবে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা হয়। মানববর্ম বানিয়ে নেতা-কর্মীরা শেখ হাসিনার প্রাণ রক্ষা করতে পারলেও বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রাণ হারান। শত শত মানুষ এখনও স্প্লিন্টারের আঘাতে জর্জরিত।

হামলার আগের রাতের স্মৃতিচারণা করে সাঈদ খোকন বলেন, ‘বাবা (অবিভক্ত ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ।
শেখ হাসিনাকে ঘিরে ধরে স্প্লিন্টারে বিদ্ধ হয়ে পরে মারা যান তিনি) আমাকে সুধা সদনে (শেখ হাসিনার প্রয়াত স্বামী ওয়াজেদ মিয়ার ধানমন্ডির বাসভবন) পাঠিয়েছিলেন। নেত্রীকে হামলার পূর্বাভাস দিতে। আমি সুধা সদনে গিয়ে বলি যে নেত্রীর সঙ্গে দেখা করব। নেত্রী তখন সাংগঠনিক সফর শেষে বিশ্রামে ছিলেন।

‘নেত্রী আমাকে ডেকে নেন দোতলায়। তখন আমি বলি, বাবা আমাকে বলেছে আপনাকে জানাতে। সুধা সদনসহ আপনার কাল সভায় যাওয়ার রাস্তা ও সভাস্থলে হামলা হতে পারে। হামলাকারীরা নিরাপদে ঢাকায় চলে এসেছে। আপনি আমার সঙ্গে আমাদের বাসায় চলেন। এখানে নিরাপদ নন আপনি। বাবা আপনাকে যেতে বলেছেন।’

সাঈদ খোকন জানান, এ কথা শোনার পর কিছু মুহূর্ত চুপ ছিলেন শেখ হাসিনা। পরে বলেন, ‘এরপর নেত্রী আমার দিকে তাকিয়ে হেসে জানালেন যে, রাজনীতি করতে গেলে তো ভয় পাওয়া যাবে না।’

খোকন বলেন, “আমি নেত্রীকে বলেছিলাম যে, আপনার যেসব লিংক আছে, তাদের থেকেও তথ্য নিয়ে নিতে পারেন। তবে নেত্রী তাতে বিচলিত হননি। বরং আমাকে বলেছেন যে, ‘তুমি বাসায় যাও। কাল অনেক কাজ আছে। বাসায় গিয়ে খাওয়াদাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ো’।”

‘আমি এ কথা শুনে নিচে নেমে আসি। আমার মন চাইছিল না যেতে। মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করি। এর মধ্যে নেত্রী আবার আমাকে নিরাপত্তাকর্মী দিয়ে বাসায় যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তবে আমি যাইনি। ভোরে বাসায় আসি’- সুধা সদন থেকে বের হওয়ার পর নিজের অনুভূতির কথা জানান তিনি।

২১ আগস্টের দিনের কথা স্মরণ করে খোকন বলেন, ‘ওই দিন আমি সভাস্থলে আসি। এরপর আবার পুরান ঢাকায় গিয়ে একটা বিশাল মিছিল নিয়ে ফিরে আসি। নেত্রী আসার পর বক্তৃতা শুরু করেন। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। প্রায় শেষের দিকে। নেত্রীর শেষ কথাগুলো যেন আবার বলা হয় সেই অনুরোধ করেন গণমাধ্যমকর্মীরা। নেত্রী বলতে যাবেন, ঠিক সেই সময়ে একটা গ্রেনেড বিস্ফোরণ হয়।’

সাঈদ খোকন জানান, হামলায় তিনি সভাস্থল থেকে ছিটকে পড়েন। তার দুই পায়ের শক্তি হারিয়ে ফেলেন।
বলেন, ‘আমি সাথে সাথে নিজেকে ঠিক করে ফেলি। আস্তে আস্তে পায়ে হাত দিয়ে দেখি। এর মধ্যে আরও গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ হয়। সাথে গুলিও চলে।

‘কোনোমতে উঠে দাঁড়িয়ে দেখি বাবার সারা শরীর রক্তে ভিজে আছে। আশপাশের অনেকের একই অবস্থা। আমি বাবাকে জড়িয়ে ধরি। এরপর আমাকে ও বাবাকে বারডেম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাবাকে বাঁচাতে পারিনি।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান এই হামলার ‘মাস্টার মাইন্ড’ বলে দাবি করেন সাঈদ খোকন।

২০১৮ সালের রায়ে তারেক রহমানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। তবে খোকন তার মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন। বলেন, ‘আমি নিজে আক্রান্ত, আমি আক্রান্তের পরিবারের। আমার বাবা এই হামলায় মারা গেছেন। এমন আরও ২৪ জন মারা গিয়েছেন। আর এই হামলার পরিকল্পনাকারী লন্ডনে বসে আছেন। তাকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে এনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

স্মরণসভায় মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ওমর আলীসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন