December 24, 2024, 3:00 am

সংবাদ শিরোনাম :
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তবর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে:উত্তরা পূর্ব থানা কর্মিসভায় আমিনুল হক পারিবারিক কলহের জেরে আপন ভাই কর্তৃক জলিল হত্যা মামলার পলাতক আসামি সাগর (২০) কে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ ও র‍্যাব-৭ লাখো মুসল্লির অশ্রু সজল নয়নে আমিন-আমিন ধ্বনীতে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিন দিনের ইজতেমা কালীগঞ্জে ফেন্সিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী জামিনী কান্ত, গ্রেফতার  ২৯০০ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ডিবি-গুলশান সিভিল এভিয়েশন একাডেমিতে ICAO CAA Approval of Training Organizations (ATO) Course এর সমাপনী অনুষ্ঠিত খুলনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে একজন নিহত ঢাকায় ১৯ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে দাওয়াতে ইসলামীর ইজতিমা উত্তরা প্রেসক্লাবের আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত দক্ষিনখানে রাজউকের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ভবন নির্মাণ করছে মধ্য আজিমপুরের ইসলাম বোখারী রোডে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ

এডিসের লার্ভা পেলে ২৭ এপ্রিল থেকে জেল ও জরিমানার হুশিয়ারি ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলামের

তামান্না আক্তার: ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে একযোগে ডিএনসিসি’র সকল ওয়ার্ডে মাসব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান শুরু করেছি। মানুষকে সচেতন করছি। তবে আগামী ২৭ এপ্রিল তারিখ থেকে কোনো বাসায় বা অফিসে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে জেল ও জরিমানা করা হবে। সরকারি অফিসেও যদি লার্ভা পাওয়া যায় সে অফিসের যিনি দায়িত্বে আছেন তার বিরুদ্ধে মামলা হবে, জরিমানা হবে। এমনকি আমার সিটি কর্পোরেশনের কোনো অফিসেও যদি লার্ভা পাওয়া যায় সেই অফিসের কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার ক্লিয়ার মেসেজ। লার্ভা পেলে মামলা হবে, জেল হবে, জরিমানা হবে এবং জরিমানার টাকার পরিমাণ আরও অনেক বেড়ে যাবে। আমাদেরকে আরো ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।’

সোমবার (২২ এপ্রিল ২০২৪) দুপুরে রাজধানীর মিরপুর রূপনগর এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে একযোগে ডিএনসিসি’র ৫৪টি ওয়ার্ডে মাসব্যাপী জনসচেতনতামূলক প্রচার অভিযান উদ্বোধনকালে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আমি আগেই ঘোষণা দিয়েছি ঈদের পর থেকে ডেঙ্গু মৌসুম শুরুর আগেই ডেঙ্গু প্রতিরোধে একযোগে ৫৪টি ওয়ার্ডে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করবো। বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি কারিগরি কমিটি রয়েছে। তারা সবসময় আমাদের পরামর্শ দেন সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করিম। আমাদের কীটতত্ত্ববিদরা বলেছেন এখন থেকেই মাঠে নামতে। তাই আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি। সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ, আপনারা সচেতন হলে জেল-জরিমানা, মামলার দরকার নাই। তিন দিনে একদিন জমা পানি ফেলে দিন। এডিস মশা জন্মাতে পারে এমন জায়গাগুলো পরিষ্কার করুন। এডিস মশা কামড় না দিলে ডেঙ্গু হবে না। সচেতন হয়ে নিজে নিরাপদ থাকুন, অন্যকেও নিরপদ রাখুন।’

মেয়র বলেন, ‘বিশেষজ্ঞদের মতে খালের ও ড্রেনের ময়লা পানিতে এডিস মশা জন্মায় না। জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা জন্মায়। যেসকল পরিত্যক্ত দ্রব্যাদিতে পানি জমে এডিসের লার্ভা জন্মাতে পারে সেসব দ্রব্যাদি সিটি কর্পোরেশন কিনে নিচ্ছে। ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, দইয়ের কাপ এগুলো যত্রতত্র না ফেলে ডিএনসিসির কাউন্সিলরদের কাছে জাম দিন নগদ টাকা গ্রহণ করুন। পুরোনো টায়ার, কমোড, রঙের কৌটা এগুলো ছাদে বা বারান্দায় না রেখে আমাদের কাউন্সিলরদের কাছে জমা দিয়ে টাকা নিন।’

উল্লেখ্য, পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি ও সেগুলো সংগ্রহের জন্য মূল্য তালিকা: চিপসের প্যাকেট/সমজাতীয় প্যাকেট (প্রতি পিস) ১ টাকা, আইসক্রীম এর কাপ, ডিসপেজেবল গ্লাস/কাপ (প্রতি পিস) ১ টাকা, ডাবের খোসা (প্রতি পিস) ২ টাকা, কন্ডেন্স মিল্ক এর কৌটা (প্রতি পিস) ২ টাকা, মাটি/পাস্টিক/সিরামিক/মেলামাইন এর (প্রতি পিস) ৩ টাকা, অন্যান্য পরিত্যক্ত পাস্টিকের দ্রব্যাদি (প্রতি কেজি) ১০ টাকা, পরিত্যক্ত টায়ার (প্রতি পিস) ৫০ টাকা, পরিত্যক্ত পলিথিন (প্রতি কেজি) ১০ টাকা, পরিত্যক্ত স্যানিটারী ওয়্যার কমোড, বেসিন ইত্যাদি (প্রতি পিস) ১০০ টাকা।

মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ ডিএনসিসি’র সকল ওয়ার্ডে একযোগে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রত্যেক কাউন্সিলরকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কাউন্সিলররা নিজ নিজ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, রাজনীতিবিদ, মসজিদের ইমাম, স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করনীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভা ও র‍্যালি আয়োজন করবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেট বিতরণ করবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রচারণার ব্যবস্থা করবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে রূপনগর এলাকার বাড়ি মালিক সমিতির সদস্যদের নিয়ে কাজ করছি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা জরুরী৷ শুধু সিটি কর্পোরেশন একার কাজ নয় এটি। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামীলীগসহ এলাকার সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে ডিএনসিসির মাসব্যাপী এই প্রচারণা অভিযান সফল করবো।’

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে রোগীর বাসা ও আশেপাশের এলাকায় মশার ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। ডেঙ্গু রোগীকে মশা কামড় দেয়ার পরে অন্যকে কামড়ালে ডেঙ্গু হয়। তাই রোগী চিহ্নিত হলে তার আশপাশ পরিষ্কার রাখা ও সতর্ক থাকা জরুরি।’

ডিএনসিসি মেয়রের উপদেষ্টা ও কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাসার বলেন, ‘আমি সকালে এই এলাকার কয়েকটি বাড়িতে পরিদর্শন করেছি৷ একটি বাড়িতে পরিত্যক্ত টায়ারে অসংখ্য লার্ভা পেয়েছি। দেখুন সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা কিন্তু বাড়ির ভিতরে পরিত্যক্ত টায়ার খুঁজে পাবে না। আমাদের নিজেদেরই এসব পরিষ্কার করতে হবে। কোথায় এসব লার্ভার উৎস আছে খুঁজে বের করুন এবং ধ্বংস করুন।’

ডিএনসিসির মাসব্যাপী জনসচেতনতামূলক প্রচার অভিযান উদ্বোধন শেষে ডিএনসিসি মেয়র এডিস মশার উৎসস্থল-গাড়ীর পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড এগুলো দেখিয়ে জনগণকে সচেতন করেন এবং পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি ক্রয়ের মাধ্যমে কার্যক্রমটি উদ্বোধন করেন।

পরে ডিএনসিসি মেয়র অন্যান্য অতিথিবৃন্দ, স্কাউট ও বিএনসিসির সদস্য এবং কাউন্সিলরসহ সবাইকে নিয়ে র‍্যালিতে অংশ নেন। সচেতনতামূলক র‍্যালিটি রুপনগর ২৩ নম্বর সড়ক হয়ে প্রধান সড়কের প্রায় আধা কিলোমিটার প্রদক্ষিণ করে। র‍্যালি শেষে ডিএনসিসি মেয়র জনসাধারণের মাঝে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক লিফলেট বিতরণ করেন।

অঅনুষ্ঠানে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মোঃ মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবেদ আলী, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শিখা চক্রবর্তী ও অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন