December 23, 2024, 11:56 am

সংবাদ শিরোনাম :
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তবর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে:উত্তরা পূর্ব থানা কর্মিসভায় আমিনুল হক পারিবারিক কলহের জেরে আপন ভাই কর্তৃক জলিল হত্যা মামলার পলাতক আসামি সাগর (২০) কে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ ও র‍্যাব-৭ লাখো মুসল্লির অশ্রু সজল নয়নে আমিন-আমিন ধ্বনীতে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিন দিনের ইজতেমা কালীগঞ্জে ফেন্সিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী জামিনী কান্ত, গ্রেফতার  ২৯০০ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ডিবি-গুলশান সিভিল এভিয়েশন একাডেমিতে ICAO CAA Approval of Training Organizations (ATO) Course এর সমাপনী অনুষ্ঠিত খুলনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে একজন নিহত ঢাকায় ১৯ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে দাওয়াতে ইসলামীর ইজতিমা উত্তরা প্রেসক্লাবের আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত দক্ষিনখানে রাজউকের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ভবন নির্মাণ করছে মধ্য আজিমপুরের ইসলাম বোখারী রোডে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ

রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশ

ডেস্ক নিউজ ॥

রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে গাম্বিয়ার দায়েরকৃত মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চারটি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। আদালত সর্বসম্মতভাবে এ আদেশ জারি করেছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী দ্য হেগে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় আইসিজের প্রধান বিচারপতি আবদুল কাভি আহমেদ ইউসুফ আদেশ ঘোষণা করেন।

আদেশ ঘোষণার শুরুতে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার দায়েরকৃত মামলার পক্ষে রোহিঙ্গা নিপীড়ন ও গণহত্যার যেসব আলামত আদালতের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেসব বিরোধের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি ইউসুফ।

আদালত বলেছেন, গণহত্যা সনদের ২ নং ধারা অনুযায়ী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে একটি বিশেষ সুরক্ষার অধিকারী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ এনে গত বছরের নভেম্বরে মামলা করে গাম্বিয়া। গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর এ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গাম্বিয়ার পক্ষে মামলার শুনানিতে নেতৃত্ব দেন দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু। অন্যদিকে মিয়ানমারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন দেশটির নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি।

সেসময় শুনানিতে মামলাকারী গাম্বিয়া রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যাতে আর কোনও ধরনের সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ৫টি আদেশ চেয়েছিল।

বৃহস্পতিবার মামলার আদেশ ঘোষণায় জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই আদালত বলেছেন, গণহত্যা সনদের ৪১ ধারার আওতায় তিনটি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশের শর্তসমূহ বিরাজ করছে। গাম্বিয়া সংখ্যালঘু এই গোষ্ঠীর সুরক্ষায় অন্তর্বর্তী যেসব ব্যবস্থার আদেশ চেয়েছে; সেগুলোর প্রথম তিনটির লক্ষ্য হচ্ছে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

দু’দিন আগে মিয়ানমার সরকারের গঠিত একটি কমিশন ২০১৭ সালে রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর অপারেশন ক্লিয়ারেন্সের সময় কিছু সৈন্য সেখানে যুদ্ধাপরাধ করলেও গণহত্যার মতো ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল না বলে এক তদন্ত প্রতিবেদনে জানায়। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই আদালত রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ ঘোষণার আগে মিয়ানমারের ওই প্রতিবেদনকে অনেকেই প্রতারণামূলক হিসেবে দেখছেন।

বৃহস্পতিবারও এই মামলার আদেশ ঘোষণার আগে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি বলেছেন, রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মতো ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে তিনি গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গারা তাদের বিরুদ্ধে নিপীড়নের মাত্রাকে অতিরঞ্জিত হিসেবে তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে রাখাইনে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দেশীয় আইনে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

মিয়ানমার এবং গাম্বিয়া উভয় দেশই ১৯৪৯ সালে গৃহীত গণহত্যা সনদে স্বাক্ষরকারী। এছাড়া আন্তর্জাতিক আদালতের সিদ্ধান্ত মানা বাধ্যতামূলক এবং সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ নেই। যদিও সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য করার মতো ক্ষমতা নেই আদালতের। তবে অতীতে খুব কম দেশই এই আদালতের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা কিংবা পুরোপুরি মেনে চলেছে।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রক্তাক্ত সামরিক অভিযান চালিয়ে ৭ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। রক্তাক্ত এই অভিযানে ধর্ষণ, গণধর্ষণ, হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও চালানো হয়। প্রাণে বাঁচতে সেই সময় রোহিঙ্গাদের ঢল নামে প্রতিবেশী বাংলাদেশে।

পশ্চিম আফ্রিকার ক্ষুদে মুসলিম দেশ গাম্বিয়া ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্যদের উৎসাহে গণহত্যার দায়ে মামলা করে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতে তোলে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন