October 27, 2024, 6:23 am

সংবাদ শিরোনাম :
খিলক্ষেত কুরাতুলি ট্রাকের বেপরোয়া কান্ডে পুলিশ নিহত  শুধু ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে আমরা সন্তুষ্ট নয়;সকল অঙ্গ-সঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত ডেঙ্গু প্রতিরোধে দক্ষিণ খান বিএনপি’র ভিন্ন রকম ক্যাম্পেন  শেখ হাসিনাকে ৫৭ বার ফাঁসি দিলেও ক্ষতি পূরণ হবে না: সেলিম উদ্দিন। টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সভায় আ’লীগ নেতাসহ ৯ জনের সদস্যপদ বাতিল পাইকগাছায় ঘুর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে অসহায় দিনমজুর সহিলের মাথা গোজার ঠাইটুকু হারিয়ে ফেলেছে খুলনা জেলা কারাগারে হাজতি ও কয়েদির সাথে মারামারি ৭ম আন্তর্জাতিক Flight Safety Seminar 2024 এর সমাপনী অনুষ্ঠান বিগত ১ বছরে দুবার ঝড়ে কপাল পোড়েছে কয়রা বাসির দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তবুও নির্বাহী প্রকৌশলী শারমিনকে গাজীপুরে পদায়ন

রাজশাহী মহানগর যুবলীগ ১৮ বছর থেকে একই নেতৃত্ব, নতুনের আশায় তৃণমূল তাদের মধ্যে তৃণমূলে আলহাজ্ব নাহিদ আক্তার নাহান শীর্ষে। 

সোহেল রানা রাজশাহী জেলা প্রতিনিধঃ রাজশাহী: ২০১৬ সালে হয়েছিল রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন। সেবার মহানগরের কমিটিতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন রমজান আলী ও মোশাররফ হোসেন বাচ্চু।এর আগে পরে মিলিয়ে টানা ১৮টি বছর নতুন নেতৃত্ব নেই সংগঠনটিতে। এতে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে তাদের কার্যক্রম।

তৃণমূলেও আছে নানা অস্বস্তি। সাংগঠনিক থানা-ওয়ার্ড কমিটিগুলোর দশাও এখন শোচনীয়।এমন পরিস্থিতিতে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও অসন্তোষ বাড়ছে। এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে চান তৃণমূল থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের নেতারা। তাদের দাবি, দ্রুত সম্মেলন দিয়ে নতুন নেতৃত্ব গড়ে তোলা। এর মধ্যে দিয়ে রাজশাহী মহানগর যুবলীগকে ফের লাইমলাইটে নিয়ে আসার দাবিও করেন তারা।

সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ১৮ এপ্রিল রমজান আলীকে সভাপতি ও মোশাররফ হোসেন বাচ্চুকে সাধারণ সম্পাদক করে রাজশাহী মহানগর যুবলীগের কমিটি করা হয়। ২০১৬ সালের ৪ মার্চের সম্মেলনেও রমজান আলী ও বাচ্চু কমিটি পুনর্নির্বাচিত হন। এর মাধ্যমে টানা ১৮ বছর ধরে তারই মহানগর যুবলীগের নৌকা চালাচ্ছেন।

অবশ্য, শিগগিরই রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সম্মেলনের আভাস এসেছে কেন্দ্র থেকে। আভাস পেয়ে সংগঠনের মূল নেতৃত্বে আসতে মাঠে নেমে গেছেন প্রায় ডজন খানেক নেতা। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়তা ফেরাতেও এখন দৌড়ঝাঁপ করছেন অনেকে। এতে কিছুটা চাঙা পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে রাজশাহী মহানগর যুবলীগে।

জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে সভাপতি পদে বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি প্রার্থী হতে পারেন। পদটি পেতে তিনি সক্রিয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তিনি বলেন, বছরের পর বছর মহানগর যুবলীগের সম্মেলন না হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। সম্মেলন হলে সেটি আর থাকবে না। আমরা সবাই মিলে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। দেশের কঠিন সময়ে সবকিছু মোকাবিলায় সবার পাশে থাকতে চাই।

সভাপতি পদে নাম শোনা যাচ্ছে বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি মোকলেসুর রহমান মিলনেরও। এই পদে একক প্রার্থিতার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, অবশ্যই সভাপতি পদে একাধিক প্রার্থী থাকবে। যুবলীগ সমগ্র এশিয়ায় একটি অন্যতম সর্ববৃহৎ সংগঠন। রাজশাহীতে সেই সংগঠনের সম্মেলন হবে, আর গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোয় যদি কোনো প্রার্থীই না থাকে তবে কি সেই সংগঠনের অস্তিত্ব থাকে?

মিলন আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি যুবলীগের রাজনীতির সাথে আছি। চলমান সংগঠনেও এখনও পদ-পদবিতে আছি। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হয়নি। পদ পাওয়া নিয়ে এখানে দাবি-দাওয়ার কিছু নাই। আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলন ঘোষণা করা হলে অবশ্যই সভাপতি পদে নিজের প্রার্থিতা প্রকাশ করব। পরে দল যাকে উপযুক্ত মনে করবে, তিনি সভাপতি-সম্পাদক নির্বাচিত হবেন।

বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আশরাফুল আলমও আছেন এ তালিকায়। ছাত্র রাজনীতি ও দীর্ঘ সময় মহানগর যুবলীগের সহ-সভাপতি থাকার সুবাদে সভাপতি পদে প্রার্থী হতে পারেন তিনিও। জানতে চাইলে আশরাফুল বলেন, গত দুই কমিটিতেই সহ-সভাপতি ছিলাম। এখনও একই পদে আছি। সে জায়গা থেকে সভাপতি প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশা তো থাকতেই পারে। তবে সবকিছুই দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।

সুষ্ঠু ধারায় দল ও সম্মেলন পরিচালিত হলে সভাপতি পদে প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান কমিটির আরেক সহ-সভাপতি আমিনুল রহমান খান রুবেল। তিনি বলেন, যখন সাংগঠনিক ধারায় নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে, তখন আমি প্রার্থী হব। সংগঠনকে নেতৃত্ব চাওয়ার সুযোগ যদি না দেওয়া হয়, তবে তো কেউই প্রার্থী হতে চাইবেন না। সংগঠনই ছেড়ে দেবেন।

রুবেল বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ বলে মহানগর সম্মেলন করে ছেড়ে দেব, আর থানা-ওয়ার্ডগুলো তারও অনেক আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ; সেগুলো থেকে যাবে- এটা কোনো কথা হতে পারে না। একাধিক ওয়ার্ডে বছরের পর বছর আহ্বায়ক কমিটি। আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ আসলে কয়দিন? সম্মেলনটা সুষ্ঠু ধারায় হোক। সুষ্ঠু ধারায় হলে অনেকেই প্রার্থী হবেন।

সংগঠনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ সাধারণ সম্পাদক। পদটি পেতে ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছেন অনেক নেতা। যাদের মধ্যে সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদ আক্তার নাহানের নাম শোনা যাচ্ছে জোরেশোরে। কারণ, নাহান ২০১৬ সালের সম্মেলনেও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। তবে তৃণমূল কর্মীদের আকাঙ্ক্ষার প্রেক্ষিতে ভোটের পর্যায়ে যাওয়ার ফলে বাদ পড়েন তিনি। পরে ওই কমিটির কোথায় রাখা হয়নি তাকে।

মহানগরের দলীয় বড় কোনো পদে না থাকলেও তৃণমূল পর্যায়ে যুবলীগকে চাঙ্গা করে রেখেছেন নাহিদ আক্তার নাহান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না হওয়ায় সংগঠনটি স্থবির হয়ে পড়েছে। ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতাকর্মীদের ক্ষোভ বাড়ছে। পদে না থাকলেও অনুভূতির জায়গা থেকে যুবলীগ কর্মীদের বিপদে-আপদে পাশে থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু বেশিদিন তো এভাবে চলতে পারে না। তাই দ্রুত সম্মেলন দরকার বলে তিনি মনে করেন।

এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুকুল শেখ, যুগ্ম সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিরসহ আরও কিছু নেতাও প্রার্থী হতে পারেন বলে সংগঠন সূত্রে জানা গেছে।

দীর্ঘ সময় একই নেতৃত্বে থাকা প্রশ্নে রাজশাহী মহানগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলী বলেন, এখন আমরাও মনে করি সম্মেলন হওয়াটা দরকার। আমরা চাইছি নতুন নেতৃত্বের হাতে সংগঠনের দায়িত্ব তুলে দিতে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় সেটি করা যাচ্ছে না। ওয়ার্ড পর্যায়েও নেতাকর্মীরাও সম্মেলন চান। সম্মেলন হলে নেতাকর্মীরা যেমন চাইবেন বা যার পক্ষে রায় দেবেন- আমরা তাতেই খুশি।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন