October 23, 2024, 9:36 am

সংবাদ শিরোনাম :
খুলনা কয়রায় হামলা করে আসামি ছিনতাই, ৫ পুলিশ সদস্য আহত খুলনা পাইকগাছায় বিগত এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৪ আহত ৫৬  কয়রায় এক নারী বাসা বাড়ি কাজ করতে করতে বর্তমানে চা বিক্রি করেই স্বাবলম্বী কয়রা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতির মতবিনিময় সভা  আন্তরজাতকি এয়ারট্রাফকি কন্‌ট্রালারূক্স ডে উদযাপন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ আতিকুল ইসলামকে গ্রেফতার ১৯তম জাতীয় ফার্নিচার মেলা শুরু রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় কেশবপুরে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ৮৯ টি মন্ডপে  দুর্গা পূজা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হলো  ঋণখেলাপি তারেক চৌধুরী অপকর্মের শেষ কোথায়।অবৈধ ক্ষমতার দাপটে গড়ে তুলেছেন ক্যাডার বাহিনি বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় তিন গৃহকর্মী গ্রেফতার, ৩১ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার

মোহাম্মদপুরে “ডায়মন্ড” এবং “দে ধাক্কা” কিশোর গ্যাং চক্রের হোতা জুলফিকারসহ আটক-৫ 

মনির হোসেন জীবন- রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় “ডায়মন্ড” এবং “দে ধাক্কা” কিশোর গ্যাং পরিচালনাকারী চক্রের অন্যতম হোতা জুলফিকারসহ ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

র‌্যাব বলছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ এর একটি গোয়েন্দা দল জানতে পারে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় কতিপয় কিশোর গ্যাং সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয় ও সেবন, এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সাধারণ মানুষকে হয়রানি এবং বিভিন্ন রকম সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিল।

এরই ধারাবাহিতাকতায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় র‌্যাব-৩ এর একটি চৌকস দল সুনিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আদাবর থানার মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটি এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃত ব্যক্তিরা হলো, কিশোর গ্যাং সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম হোতা মোঃ জুলফিকার আলী (৩৭) তার সহযোগী মোঃ হারুন অর রশিদ (৩৮), মোঃ শামছুদ্দিন বেপারী (৪৮), কৃষ্ণ চন্দ্র দাস (২৮) ও মোঃ সুরুজ মিয়া (৩৯)।

জামালপুর, ময়মনসিংহ, ভোলা, মুন্সিগঞ্জ জেলায় তাদের গ্রামের বাড়ি বলে জানা গেছে। অভিযানকালে তাদের নিকট থেকে ১ টি বিদেশী পিস্তল, ১ টি ম্যাগাজিন, ২ টি চাপাতি ও ৭ টি ছুরি উদ্বার করা হয়।

আজ শনিবার সকাল ১০ টায় রাজধানীর টিকাটুলিস্হ র‍্যাব-৩ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লেঃ কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।

এসময় র‌্যাব-৩ এর সহকারী পুলিশ সুপার স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) মোঃ আজাহার হোসেন সহ র‌্যাবের অন্যান্য উধর্বতন কর্মকর্তারা উপস্হিত ছিলেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা র‌্যাবকে জানান, মোহাম্মদপুর এলাকায় বেশকিছু কিশোরগ্যাং সক্রিয় রয়েছে। তারমধ্যে জুলফিকারের নেতৃত্বে এবং তার সহযোগিতায় “ডায়মন্ড” এবং “দে ধাক্কা” নামে দু’টি কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে আসছিল তারা। এলাকার বেশকিছু বেপরোয়া ও মাদকসেবী কিশোরদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরগ্যাং পরিচালনার মাধ্যমে এলাকায় অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ, ডাকাতি ও ভুমি দখল সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে থাকে। জুলফিকারের কিশোরগ্যাং পরিচালনা করার জন্য আটক হারুন, শামছুদ্দিন বেপারী, কৃষ্ণ চন্দ্র দাস এবং সুরুজ মিয়া সার্বিক সহযোগিতা করে থাকে। জুলফিকার মূলত “ডায়মন্ড” এবং “দে ধাক্কা” গ্রুপের কিশোর গ্যাংদের নিকট দেশী-বিদেশী পিস্তল ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, এছাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য কিশোর গ্যাংকে অস্ত্র সরবরাহ করে তাদের দ্বারা দলবদ্ধভাবে মোটরসাইকেলের মহড়া দিয়ে এলাকায় ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি করে। তাদের নির্দেশে “ডায়মন্ড” এবং “দে ধাক্কা” দু’টি কিশোরগ্যাং গ্রুপের সদস্যরা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে রিক্সা, ভ্যান, সিএনজি ও বাস যাত্রীদেরকে টার্গেট করে যাত্রীদের ব্যাগ/পার্টস, মোবাইল ইত্যাদি ছিনতাই করে থাকে।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানায়, মোহাম্মদপুর জুড়ে তাদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা “ডায়মন্ড” এবং “দে ধাক্কা” দু’টি কিশোরগ্যাং এর তৎপরতায় প্রতিনিয়ত তারা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে বিরোধী অন্যান্য গ্যাংসমূহের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তো। এসব ঘটনায় তারা যে কাউকে গুলিবিদ্ধ, কুপিয়ে জখম, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ভয়ংকর ঘটনা ঘটাতেও দ্বিধাবোধ করে না।

র‌্যাব বলছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড়, চাঁদ উদ্যান, লাউতলা, নবীনগর হাউজিং, বসিলা চল্লিশ ফিট, কাঁটাসুর, তুরাগ হাউজিং, আক্কাস নগর, ঢাকা উদ্যান নদীর পাড়, চন্দ্রিমা হাউজিং, নবীনগর হাউজিং, বসিলা হাক্কার পাড় ইত্যাদি এলাকাজুড়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাং এর মহড়া পরিচালনা করতো। বিভিন্ন ঠিকাদারের কাজ আটকিয়ে চাঁদা আদায়ের জন্য কিশোর গ্যাং সদস্যদেরকে বিদেশী পিস্তল দিয়ে ঠিকাদারের নিকট পাঠাত।

র‌্যাব সূত্র জানিয়েছে, আটককৃত জুলফিকার ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। পরবর্তীতে সে পড়াশোনা বাদ দিয়ে ওয়ার্কশপে এবং নারায়ণগঞ্জে এসে পিকআপে হেলপারি করতো। তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ থানায় ১ টি চুরির মামলা রয়েছে। এঘটনার পর সে পালিয়ে সৌদি আরবে চলে যায়। ২০২১ সালে দেশে আসার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে আটক করে জেলহাজতে পাঠায় এবং সে ২ মাস জেল খেটে জামিনে মুক্ত হয়। এরপর হারুনের সাথে মোহাম্মদপুরে চলে আসে এবং প্রথমে এই এলাকায় টিউবওয়েল এর মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতে শুরু করে। ২০২২ সালে সে “ডায়মন্ড” নামের কিশোর গ্যাং বাহিনী তৈরী করে।

পরবর্তীতে সে আরও একটি কিশোরগ্যাং বাহিনী তৈরী করে সেটার নাম দেয় “দে ধাক্কা” কিশোর গ্যাং বাহিনী।আটককৃত হারুণ ২০২১ সালে আদাবর থানার একটি চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার হয়ে ১ মাস জেল খেটে জামিনে মুক্ত হয়। জামিনে মুক্ত হয়ে সে জুলফিকার এর সাথে যোগসাজশে কিশোর গ্যাং পরিচালনা করতে শুরু করে।   তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন