October 26, 2024, 4:28 pm

সংবাদ শিরোনাম :
ডেঙ্গু প্রতিরোধে দক্ষিণ খান বিএনপি’র ভিন্ন রকম ক্যাম্পেন  শেখ হাসিনাকে ৫৭ বার ফাঁসি দিলেও ক্ষতি পূরণ হবে না: সেলিম উদ্দিন। টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সভায় আ’লীগ নেতাসহ ৯ জনের সদস্যপদ বাতিল পাইকগাছায় ঘুর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে অসহায় দিনমজুর সহিলের মাথা গোজার ঠাইটুকু হারিয়ে ফেলেছে খুলনা জেলা কারাগারে হাজতি ও কয়েদির সাথে মারামারি ৭ম আন্তর্জাতিক Flight Safety Seminar 2024 এর সমাপনী অনুষ্ঠান বিগত ১ বছরে দুবার ঝড়ে কপাল পোড়েছে কয়রা বাসির দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তবুও নির্বাহী প্রকৌশলী শারমিনকে গাজীপুরে পদায়ন সাবেক কমিশনার হারুনের দাপটে বসত ভিটে ছড়া এক দম্পতি   খুলনা কয়রায় হামলা করে আসামি ছিনতাই, ৫ পুলিশ সদস্য আহত

মানিকগঞ্জ সদর এলাকার চাঞ্চল্যকর নবু প্রামানিক হত্যা মামলার দীর্ঘ ২৪ বছরের পলাতক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোঃ মজিবরকে (৬০) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪।

তামান্না আক্তার হাসিঃ র‍্যাব-৪ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গত ০২ জানুয়ারি ২০২৩ রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন আদাবর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মানিকগঞ্জের চাঞ্চল্যকর নবু প্রামানিক হত্যা মামলার দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে পলাতক

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোঃ মজিবর (৬০) কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ মজিবর ও ভিকটিম নবু প্রামানিক উভয়ই মানিকগঞ্জ জেলার নারীকুলী গ্রামে বসবাস করতো এবং সেই সুবাদে তাদের মধ্যকার সুসম্পর্ক ছিলো। গত ১৬/১১/১৯৯৮ তারিখ বিকাল অনুমান ০৫:৩০ ঘটিকার সময় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ভিকটিম নবু প্রামানিক এর ছেলে মোঃ বাদশার সাথে আসামী মোঃ মজিবরের চাচাতো শ্যালক মোঃ বরকতের সাথে বিরোধ বাধে যার সূত্র ধরে ভিকটিম নবু প্রামানিক এর স্ত্রী নুর নাহারের সাথে আসামী মোঃ মজিবরের স্ত্রী জুলেখার মধ্যে কথা বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উক্ত ঝগড়া থামানোর জন্য নবু প্রামানিক চেষ্টা করলে ঘটনাস্থলে মোঃ মজিবর, ছমির, আলতাফ, লেবু, জামাল এবং আব্বাছ দাঁ, লাঠি, শাবলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভিকটিম নবু প্রামানিক এর উপর অতর্কিত ভাবে আক্রমণ করে। সেখানে উপস্থিত আসামী মজিবরের হাতে থাকা নৌকার কাঠের বৈঠা দিয়ে ভিকটিম নবু প্রামানিককে আঘাত করলে গুরুতর জখম করে যার ফলে ভিকটিম নবু প্রামানিকের মাথার মগজ বের হয়ে যায়। তখন ভিকটিম নবু প্রামানিক মাটিতে পড়ে গেলে জামাল ও অন্যান্য আসামীদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে মারধর করে ভিকটিম নবু প্রামানিকের মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থ থেকে পালিয়ে যায়। ভিকটিমের স্ত্রীর চিৎকার শুনে আশপাশ হতে লোকজন এসে ভিকটিম নবু প্রামানিককে রক্তাত্ত অবস্থায় উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম নবু প্রামানিককে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতের স্ত্রী নুর নাহার বাদী হয়ে আসামী মোঃ মজিবর সহ সর্বমোট ০৭ জনকে আসামী করে একই দিন মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর আসামী মোঃ মজিবর ব্যতিত বাকি এজাহারনামীয় সকল আসামী থানা পুলিশ কর্তৃক ধৃত হলেও মামলা হওয়ার পর থেকেই আসামী মজিবর আত্মগোপনে চলে যায়। অত্র মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা এজাহারনামীয় আসামী মোঃ মজিবর’কে অভিযুক্ত করে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন এবং এজাহার নামীয় বাকি ০৬ জন আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশীট থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন। পরবর্তী চার্জশীটের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত উক্ত মামলার বিচারকার্য পরিচালনা করেন এবং পর্যাপ্ত স্বাক্ষ্য প্রমাণ ও উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ভিকটিম নবু প্রামানিক হত্যাকান্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে মানিকগঞ্জ জেলার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ চার্জশীটে অভিযুক্ত আসামী মোঃ মজিবরকে যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করেন। পলাতক আসামী মোঃ মজিবর মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় প্রথম থেকেই গত ২৪ বছর পলাতক ছিল।

আসামীর জীবন বৃত্তান্তঃ আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী ১৯৬২ সালে মানিকগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন রাজনগর এলাকায় জন্মগ্রহণ করে। সে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহন করেননি। ব্যক্তিগত জীবনে আসামীর ঘরে তার দুইটি মেয়ে এবং একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ১৯৯৮ সালের পর থেকে আসামী আর কোনোদিন মানিকগঞ্জে অবস্থান করেন নাই। গত ২৪ বছর ধরে আসামি মোঃ মজিবর নাম পরিবর্তন করে মোঃ কালাম নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রথমে আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা, মোহাম্মদপুরহ ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিল। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আসামী নিজের পরিচয় গোপন করার জন্য ক্রমাগতভাবে সে পেশা পরিবর্তন করে। প্রথমদিকে সে দিনমজুর, রিক্সাচালক হিসেবে কাজ করে। পরবর্তীতে আসামী মোঃ মজিবর মোহাম্মদপুরের আদাবর থানা এলাকায় অবস্থান করে মাছ ধরে আত্মগোপনে থেকে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন