October 26, 2024, 2:22 pm
তামান্না আক্তার হাসিঃ এলিট ফোর্স হিসেবে র্যাব আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। সাম্প্রতিককালে প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে সাধারণ জনগনের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণীর সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। জঙ্গীবাদ, খুন, ধর্ষণ, নাশকতা এবং অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি সাম্প্রতিক এসব প্রতারক চক্রের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব সদা তৎপর।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ২৩/০১/২০২৩ তারিখ বিকালে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সরকারী-বেসরকারী উচ্চ বেতনে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেওয়া সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ নিম্নোক্ত আসামীদের’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
মোঃ সোহেল রানা @ মিলন (৩৭), জেলা- মাগুরা।মোঃ ময়নুল ইসলাম মিঠু (২৮), জেলা- ঝিনাইদহ।মোঃ হাফিজার রহমান (৪০), জেলা- মাগুরা।মোঃ ইব্রাহিম (২৩), জেলা- চাঁদপুর।মোঃ আল আমিন (২৩), জেলা-ঝালকাঠি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবদে ধৃত আসামীরা তাদের কৃত অপরাধ স্বীকার করেছে। তারা প্রতারণা মূলক ভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বেকার যুবকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে, গ্রেফতারকালে তাদের কাছে ভুয়া নিয়োগপত্র, ফাঁকা চেকসহ জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত অন্যান্য সামগ্রী পাওয়া যায়।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। আসামীরা জালজালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া ও নকল কাগজপত্র , ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরী ও হেফাজতে রাখে। পরবর্তীতে উচ্চ বেতনের চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের অসহায় বেকার যুবকদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে নগদ লক্ষ লক্ষ টাকা অগ্রীম গ্রহন করে ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে। এই প্রতারক চক্রের রয়েছে কিছু পেইড এজেন্ট যারা বেকার ও শিক্ষিত যুবকদের কাছে নিজেরা চাকরি পেয়ে উপকৃত হয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের আস্থা অর্জন করে। উক্ত প্রতারক চক্র কোন বাহিনীর সদস্য না হয়েও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদীন যাবৎ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে বিভিন্ন বাহিনীসহ সরকারি-বেসরকারি চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের সাধারন ও নিরীহ লোকজনকে প্রলুব্ধ করে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। প্রতারিত লোকজন টাকা দেওয়ার পরও চাকরিতে নিয়োগ না পেয়ে প্রতারকদের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তারা টাকা না দিয়ে মারধর সহ বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এই চক্রের মূলহোতা সোহেল শুধু নিয়োগ প্রতারণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, সে বাহিনীর পোষাক পরে *উর্ধতন কর্মকর্তা পরিচয়ে* সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও আপলোড ও শেয়ার করে বিভিন্ন নারীদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে কুরুচিপূর্ণ ছবি ও ভিডিও ধারণকরতঃ ভিকটিমদের ব্ল্যাকমেইল করতো। তদুপরি সে ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে চার বা ততোধিক বিয়ে করার মতো অপরাধ করেছে।
উক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতে এরুপ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর জোড়ালো সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।