October 27, 2024, 10:17 am
তামান্না আক্তার হাসিঃ র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময় বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার, ছিনতাইকারী, ধর্ষণ, অপহরণ ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বেশকয়েকটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের মত ঘৃনিত অপরাধে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ১১ জুন ২০২২ তারিখ পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার এক স্কুল ছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে ভান্ডারিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৫ তারিখ ১২ জুন ২০২২। পরবর্তীতে ধর্ষককে গ্রেফতারের দাবীতে ভিকটিমের স্কুল শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা মানবন্ধন করে। ঘটনাটি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় গুরুত্ব সহকারে প্রচারে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। র্যাব বর্ণিত অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৮ এর একটি আভিযানিক দল গত রাতে রাজধানীর উত্তরা হতে ধর্ষক মোঃ শামিম হোসেন মৃধা(৩২), পিতা- আব্দুল বারেক মৃধা, উপজেলা-ভান্ডারিয়া, জেলা-পিরোজপুর’কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত বর্ণিত ধর্ষণের সাথে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।
গ্রেফতারকৃত আরও জানায়, পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়ায় স্কুল পড়–য়া ঐ ছাত্রীকে পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ধারালো অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ভিকটিমকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় এবং ঘটনার পরপরই ঢাকায় আত্মগোপন করে।
গ্রেফতারকৃত শামিম একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। বিগত ২০১৫ সালে ২৬ জানুয়ারি ভান্ডারিয়া উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে গভীর রাতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে হামলা করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বিগত ২০১৭ সালে ০১ নভেম্বর একই উপজেলার মাদ্রাসার ছাত্রীকে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রামদা দিয়ে হত্যার ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে। একইভাবে ২০২১ সালে ১০ অক্টোবর আরেক মাদ্রাসার ছাত্রীকে যৌনপীড়ন করে। বর্ণিত ঘটনাসমূহে ভান্ডারিয়া থানায় বিভিন্ন সময়ে মামলা রুজু হয়। এছাড়াও, গ্রেফতারকৃত আরও বেশকয়েকটি ধর্ষণের মত অপরাধ সংঘঠিত করেছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু ভিকটিমরা লোকলজ্জা ও সামাজিক মর্যাদাহানির ভয়ে মামলা করা থেকে বিরত থাকে।
গ্রেফতারকৃত শামিম ঢাকা বাবু বাজার ও গাবতলী এলাকায় সিএনজি এবং প্রাইভেটকার চালক হিসেবে কাজ করে। ১৬ বছর বয়সে সে এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, মাদক সেবন ও মাদক কেনাবেচার মাধ্যমে অপরাধ জগতে প্রবেশ করে। বিভিন্ন এলাকায় সে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, বরিশাল ও খুলনা এলাকায় আত্মগোপনে চলে যেত। আত্মগোপনে থাকাকালীন সময়ও একাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটায়। সে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার এড়াতে এক স্থানে বেশিদিন অবস্থান করত না। এছাড়াও, তার নামে বিভিন্ন থানায় ধর্ষণ, হত্যা চেষ্টা ও মাদকসহ অন্যান্য অপরাধের সর্বমোট ১০ এর অধিক মামলা রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। সে ইতোপূর্বে ধর্ষণ ও অন্যান মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে ৪-৫ বার কারাভোগ করেছে। এছাড়াও, গ্রেফতারকৃত শামিম এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ০৬টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।