December 23, 2024, 9:05 am
ওসমান গনি গজারিয়া প্রতিনিধিঃ মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা সংস্কারের অভাবে বেহাল বাউশিয়া পাখির মোড় থেকে কাজী ফার্ম পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়ক। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় এক কিলোমিটার সড়কের ধুলায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। উপজেলার বাউশিয়া পাখির মোড় থেকে কাজী ফার্ম পর্যন্ত সড়কটি সংস্কারের অভাবে খানাখন্দের কারণে বেহাল হয়ে পড়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
এলাকাবাসী জানান, সড়কটিতে একটু বৃষ্টি হলেই কাদা হয়ে যায়। খানাখন্দ, ধুলা ও কাদায় বাসিন্দাদের জীবন অতিষ্ঠ বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
সরেজমিন দেখা যায়, প্রায় এক কিলোমিটার সড়কজুড়ে ধুলা। সড়কটিতে কিছুক্ষণ পরপরই ছোট-বড় গর্ত ও খানাখন্দ। গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের বাউশিয়া পাখির মোড় থেকে কাজী ফার্ম পর্যন্ত সড়কটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। খানাখন্দের কারণে সড়কটিতে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয় ছোট-বড় যানবাহন।
সড়কটির কারণে গজারিয়ার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের চাষীচর, গুয়াগাছিয়া, কদমতলী, ভৈষারচর, ভাষারচর, দত্তেরচর, শিমুলিয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ওই এলাকায় যোগাযোগের একমাত্র সড়ক এটি। কয়েক বছর ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কটিতে দেখা দিয়েছে খানাখন্দ। একবার কিছু অংশ মেরামত করা হলেও পরে সড়কটি আর মেরামত করা হয়নি। বৃষ্টির পানি খানাখন্দে জমে থাকে। আর এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী ও যানচালকেরা। ফলে উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন ইউনিয়নবাসী। ওই সড়কের পথচারীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, সড়কটিতে ইটের খোয়া বিছিয়ে রাখা হয়েছে প্রায় এক বছর ধরে। পিচ না দেওয়ায় ইটের খোয়া ধুলোবালিতে পরিণত হয়েছে। যানবাহন চলাচলের ফলে সেই ধুলা উড়ে, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ছে ফসলি জমি ও বাড়িঘরের ওপর।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ আব্দুল হক মোল্লা বলেন, বাসা থেকে পরিচ্ছন্ন কাপড় পরে বের হলেও লাভ নেই। ধুলায় কাপড় লাল রঙের হয়ে যায়।
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জামাল মিয়া বলেন, ধুলোবালুর কারণে মানুষের সর্দি-কাশি লেগেই রয়েছে। ঘরের বিছানা ও আসবাবপত্র চারবার করে পরিষ্কার করতে হয়। এক দিন পরিষ্কার না করলে দেখে মনে হয় এগুলো হাজার বছরের পুরোনো।
গৃহিণী জাহানারা আক্তার বলেন, ‘রান্নাঘরের চারপাশে কাপড় ঝুলিয়ে ধুলোবালি থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু সম্ভব হচ্ছে না। খাবারে ধুলোবালি পড়ছে নিয়মিত।’
স্থানীয় দোকানদার কাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সড়ক থেকে ধুলা এসে প্রতিদিন আসবাবপত্রে পড়ছে। আসবাবপত্রের ওপর ধুলোবালির স্তর পড়ে গেছে। ধুলাবালি থেকে রক্ষা পেতে পানি ছিটাচ্ছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।’
অটোরিকশাচালক ফারুক হোসেন বলেন, ‘একদিকে ধুলোবালি, অন্যদিকে ভাঙা রাস্তার কারণে এ সড়কে যাত্রী পাওয়া যায় না। ভাঙা রাস্তার জন্য এখন সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সংস্কারকাজ থেমে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছি আমরা। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই।’
গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল খায়ের খোকন এ বিষয়ে বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাটি কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সড়কটির কারণে এলাকাবাসী চরম বিপদে রয়েছেন। কৃষিপণ্য বাজারে নিয়ে যেতে বা জরুরি প্রয়োজনে বিভিন্ন বাজারে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। জনস্বার্থে সড়কটি সংস্কার করা দরকার। প্রতি বছর এ রাস্তাটি কাজী ফার্ম সংস্কার করে থাকে। এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে কাজটি করতে দেরি হচ্ছে। তবে আমি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, ভাঙা রাস্তার সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করবেন।’
সড়কের বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে গজারিয়া উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংস্কারের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই অর্থবছরেই সড়কটি সংস্কারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।