November 13, 2024, 6:27 am
আয়ুব আলীঃ খুলনার পাইকগাছায় লতা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু মুছার বিরুদ্ধে হিন্দুদের উপর বিভিন্ন নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে এর প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, একই কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ইব্রাহীম গাজী। শনিবার পাইকগাছা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইব্রাহীম গাজী বলেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকে বিএনপির আদর্শ ধারণ করে বিএনপির রাজনীতির সাথে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে আসছেন।
কপিলমুনি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি, ইউনিয়ন যুবদলে সাধারন সম্পাদক, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমান কমিটিতে তিনি সিনিয়র সহ-সভাপতি ও থানা আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি উল্লেখ করেন, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার লতা ইউনিয়ন হিন্দু অধ্যুষিত একটি ইউনিয়ন। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে এ ইউনিয়নে হিন্দুরাই বিএনপিকে উজ্জীবিত করে রেখেছিল।
বিএনপির লতা ইউনিয়ন কমিটির প্রথম সভাপতি ছিলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কিরণ চন্দ্র বিশ্বাস এবং সাধারন সম্পাদক ছিলেন মনোরঞ্জন রায়।মনোরঞ্জন লতা ইউনিয়ন ছেড়ে পাইকগাছা সদরে বসবাস শুরু ককলে তাকে (ইব্রাহীম) উক্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। কমিটির অধিকাংশরাই ছিলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা। বর্তমান কমিটিতে আবু মুছাকে সাধারণ সম্পাদক করায় হিন্দুদেরকে কমিটি থেকে বাদ রেখে মুছা পন্থীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, যারা দীর্ঘদিন বিএনপির কমিটিভুক্ত ছিল, আপন ভাইকে একটি মামলার বাদী করে বিএনপির হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের আসামী শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলে মুছার নেতৃত্বে তার আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ইউনিয়নের শামুকপোতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিপ্লব সরকার, মদন মোহন মন্ডলদের বাড়ীতে হামলা, লুটপাট, ভাংচুর ও চাঁদা আদায় করা হয়েছে। বিনয় কৃষ্ণ মন্ডলের ছেলে হিরন্ময় মন্ডল, ঠাকুর দাসের ছেলে প্রশান্ত মন্ডল, ভোলানাথ মন্ডলের ছেলে সমীরণ মন্ডলদের ইউনিয়নের শামুকপোতা বাজারে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এছাড়াও কিরণ ঘোষের ছেলে সমরেশ ঘোষ, শুকলালের ছেলে আনন্দ মোহন মন্ডল, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কালিদাস মাস্টারদের ইউনিয়নের কাঠামারী বাজারের দোকানে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করা হয়েছে। এছাড়া অনেক হিন্দুকে আসামী করার ভয় দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা ইব্রাহীম গাজী।
এছাড়া বহিরাগত লীজ ঘের মালিকদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় অব্যহত রেখেছে। অনেকে তার অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে বিএনপির মহাসচিব বরাবর আবেদন করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন তিনি।বর্তমানে মুছার অত্যাচারে যে হিন্দুরা একদিন বিএনপিকে উজ্জীবিত করে রেখেছিল তারা বর্তমানে আতংকিত হয়ে পড়েছে।
অনেকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতিসহ আত্মগোপনে রয়েছেন অনেকে। আমি একজন বিএনপির নুন্যতম কর্মী হিসেবে মুছার অত্যাচারে তাদের পাশে যেয়ে দাড়ানোর চেষ্টা করলে আমার উপরেও মুছা বাহিনীর সন্ত্রাসী দ্বারা অত্যাচার, নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। উক্ত মুছা শুধু হিন্দুদের উপর অত্যাচার, নির্যাতন করে ক্ষ্যান্ত হচ্ছে না, সে বিএনপির পদধারী মাসুদ মোল্লা, শহিদ সানা, মনিরুল সরদার, তুহিন হাওলাদার, রুবেল হাওলাদার, জিয়ারুল গাজীসহ অনেকের উপর অত্যাচার-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। সংবাদ সম্মেলনে তারা তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করছি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাসুদ মোল্লা, জিয়ারুল ইসলাম, আবু তুহিন হাওলাদার, ওমর ফারুক মিঠু, মনিরুল সরদার, আকতার সরদার, রুবেল মির, সহিদ সানাসহ অন্যান্যরা।