November 14, 2024, 5:31 pm
স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সার্কেল-১, মিরপুর কার্যালয়ে দালাল ও বহিরাগত দ্বারা গ্রাহক হয়রানি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে আকস্মিক অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রতারক চক্রের অনেককেই বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত। এখন অনেকটাই দালাল শূণ্য রুপে দেখা যায় মিরপুর বিআরটিএ কার্যক্রম। যার সার্থকতার মূল নায়ক বর্তমান বিআরটিএ নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইয়াসিন এর অবদান। জানা যায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকার ক্ষমতা থেকে চলে যাবার পর বিভিন্ন সময়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যৌথ অভিযান, মিরপুর বিআরটিএ পরিচালক ও ডিডি এদের সহযোগিতায় দালালদের ধরার অভিযান করে আসছিলো তাঁরা। যার ফলে বর্তমানে মিরপুর বিআরটিএ দালাল নেই বললেই চলে। এই সুযোগ নিয়ে মিরপুর বিআরটিএ সুনাম নষ্ট করার এক মহা পায়তারা করে যাচ্ছে কাফরুল থানার এএসআই সোহেল।
জানা যায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকার ক্ষমতার থাকা কালীন এএসআই সোহেল অপরাধের স্বর্গরাজ্য গড়ে তোলেন মিরপুর বিআরটিএ তে। তাছাড়া কাফরুল থানার এএসআই সোহেল ছাত্র আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষ নিয়ে বৈষম্য ছাত্রদের উপর হামলার তথ্যও পাওয়া যায়। সেই সময়ে আওয়ামী লীগ তথা ফ্যাসিবাদি সরকারের নেতা মন্ত্রীদের ও পুলিশের পোশাকের সুযোগ নিয়ে একনিষ্ঠ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে মিরপুর বিআরটিএ তে। বিভিন্ন সময়ে বিআরটিএ অফিস সহকারি ও দালালের খবর প্রকাশ হলেও এই সোহেল ছিল ধরাছোঁয়ার বাহিরে।
আমাদের অনুসন্ধানে প্রথমেই জানিয়ে রাখি কাফরুল থানার এএসআই সোহেল বিআরটিএ তথা (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সফার অথরিটির) মিরপুরের নির্বাহী পরিচালক অভিযানে আটককৃত দালালদের থানায় নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। যার ফলে মিরপুর বিআরটিএ সকলের পরিচিত মুখ হিসেবে চিহ্নিত এএসআই সোহেল। নিজের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গোপনীয়ভাবে মিরপুরের দালালী কাজ করতেন বলে জানা যায়। ৫ ই আগস্ট স্বৈরাচারী সরকারের ক্ষমতা চলে যাবার পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে কাফরুল থানার এএসআই সোহেলের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন সাধারণ জনগণ। সেবা নিতে আসা অনেক গ্রহীতা আমাদের কাছে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন।
যেখানে এএসআই সোহেল মিরপুর বিআরটিএ অর্থ উপার্জনের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেন বলে জানা যায়। আইনি পোশাকের ক্ষমতা দাপটে বিআরটিএর দালালি পেশা শুরু করে। আস্তে আস্তে দুর্নীতির শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছে যায় এএসআই সোহেল। উপরের মহলের আশীর্বাদ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ায় অনেক সময় বিআরটিএর অফিস সহকারী কিংবা কর্মকর্তারা এএসআই সোহেলের কর্মকাণ্ডে মুখ খুলতেন না।
তাছাড়া আরো জানা যায় ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের পর সোহেলের বদলি অর্ডার হয়েছে। কিন্তু উপরের মহলের আশীর্বাদে এখনো কাফরুল থানায় বহাল রয়েছেন এএসআই সোহেল। জানা যায় এএসআই সোহেল তার এই ক্ষমতা টিকে রাখতে এখনো তার থানার কিছু পুলিশ কর্মকর্তাকে মাসিক মাসোহারা দিয়ে চলেন। যার ফলে বদলি হবার পরেও এখনো পূর্ণদায়িত্বে রয়েছে এএসআই সোহেল। এএসআই নিজের অস্তিত্ব ধরে রাখতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিত ছাড়াই আশেপাশের লোকজন ধরে বিআরটিএ হাজত খানায় ঢুকিয়ে রাখেন। পরবর্তীতে লোক বুঝে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদেরকে ছেড়ে দিতেন। যার প্রমান রয়েছে সাংবাদিকদের হাতে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায় এএসআই সোহেল পুলিশের পোষাক খুলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিআরটিএ তে দালালি করে বেড়ায়। তাতে করে তার দালালি করার সুযোগ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সাধারণ জনগণের মধ্যে এখন একটি কথা ঘুরে বেড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেখানে দালাল মুক্ত করবে, সেখানে সেই দালালি করে। তাহলে পুলিশের প্রতি জনগণের কতটুকু শ্রদ্ধা থাকবে! তা প্রশ্ন থেকে যায়। ইতি মধ্যে এএসআই সোহেলের সম্পর্কে দুদক ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবর অভিযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয় নিয়ে কাফরুল থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকে জানান,এএসআই আইনি নিয়মে বিআরটিএ তে কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের কাছে এর চেয়ে বেশি খবর নেই। তাছাড়া তার বদলির বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন উপরস্থ কর্মকর্তারা বলতে পারবেন আমি জানি না।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ হেড অফিসে প্রশাসন শাখার প্রধান জনাব কামরুল ইসলাম এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, সঠিক প্রমাণ থাকলে নিশ্চয়ই আমাদের চেয়ারম্যান মহোদয় বিষয়টি নজরে নিবেন। তাছাড়া বষ্টনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে এভাবেই সাংবাদিকদের পাশে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।