October 27, 2024, 4:36 am
শাহীনঃ জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রত্যয় নিয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে এলিট ফোর্স র্যাব। র্যাবের তৎপরতার কারণে বিভিন্ন সময়ে নাশকতা সৃষ্টিকারী জঙ্গী সংগঠন সমূহের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদেরকে গুরুত্বপূর্ণ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। র্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর গোয়েন্দা নজরদারী ও অভিযানের ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনগুলোর নেতা কর্মীরা পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে বার বার ব্যর্থ হয়েছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে ধৃত হয়েছে। জঙ্গী দমনে বাংলাদেশের সফলতা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বেশ প্রশংসিত।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৩০ নভেম্বর ২০২১ ইং তারিখ ২০.১৫ ঘটিকার সময় র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ঢাকা মহানগরীর শাহ আলী থানাধীন মিরপুর বেড়ীবাধ রোডস্থ নবাবের পাকার মাথার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর নিম্নোক্ত ০৩ সক্রিয় সদস্য’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
(ক) মোঃ মাহফুজুর রহমান (২৩), জেলা- কুমিল্লা।(খ) মোঃ লোকমান হোসেন (২০), জেলা- শেরপুর।(গ) মোঃ শিপন মিয়া (২৪), জেলা- বগুড়া।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘‘আনসার আল ইসলাম’’ এর সদস্য বলে স্বীকার করে। তারা ধর্মীয় ব্যাখ্যা বিকৃত করে সাধারণ মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করায় সক্রিয় ছিলো। উল্লেখ্য যে, তারা সাধারণত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে চরমপন্থার উস্কানি দেওয়ার প্লাটফর্ম হিসাবে ব্যবহার করে আসছিলো।
(ক) মোঃ মাহফুজুর রহমান (২৩)’কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে পেশায় একজন শিক্ষক। সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন বেনামী আইডি ব্যবহার করে “আনসার আল ইসলাম” এর সদস্যেদের সাথে যোগাযোগ করতো। সে কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানা এলাকায় বিগত ০৩ বছর যাবৎ “আনসার আল ইসলাম” এর কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। সে অনলাইনে ও অফলাইনে বিভিন্ন বক্তব্য এবং উগ্রবাদী ভিডিও প্রচার করে উগ্রবাদী সংঘঠনের জন্য তহবিল সংগ্রহ ও নতুন নতুন সদস্য সংগ্রহ করে আসছিল। সে নিয়মিত আনসার আল ইসলামের নেতৃস্থানীয় সদস্যদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে কুমিল্লা জেলা বিভিন্ন থানা এলাকার সক্রিয় সদস্যদের সমন্বয় সাধনে কাজ করত বলে জানা যায়।
(খ) মোঃ লোকমান হোসেন (২০)’কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে পেশায় একজন ছাত্র । সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন বেনামী আইডি ব্যবহার করে “আনসার আল ইসলাম” এর সদস্যেদের সাথে যোগাযোগ করতো এবং “আনসার আল ইসলাম” এর সদস্যদের নিয়ে অনলাইনভিত্তিক কর্মপরিকল্পনাসহ উদ্ধুদ্ধকরণের জন্য বিভিন্ন বক্তব্য এবং উগ্রবাদী ভিডিও প্রচার করে আসছিল। সে কম্পিউটার ও গ্রাফিক্স ডিজাইনে প্রশিক্ষন প্রাপ্ত হওয়ায় বিভিন্ন উগ্রবাদী ছবি, ভিডিও, লেখা, মতবাদ প্রচার করে নতুন সদস্যদের উদ্ধুদ্ধ করে আসছিল। সে বিগত ০৩ বছর যাবৎ নিয়মিত ঢাকা ও বরিশালে অবস্থানরত “আনসার আল ইসলাম” এর সদস্যদের সাথে সরাসরি দেখা করে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা নিয়েছে বলে জানায়।
(গ) মোঃ শিপন মিয়া (২৪)’কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে পেশায় স্পিনিং মিলের শ্রমিক। সে “আনসার আল ইসলাম” এর সক্রিয় সদস্য হিসেবে অন্যান্য সদস্যদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি অন্যদের উদ্ধুদ্ধকরণের জন্যে অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী লেখালেখি ও ভিডিও প্রচার করে আসছিল। সে ০২ বছর যাবৎ আনসার আল ইসলাম এর সাথে জড়িত থেকে ঢাকা জেলার সাভার ও গাজীপুর জেলার শ্রীপুর এলাকায় “আনসার আল ইসলাম” এর সদস্যদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করত বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি অন্যান্য সহোচরদের গ্রেফতারে র্যাব এর গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।