December 22, 2024, 10:05 pm

সংবাদ শিরোনাম :
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তবর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে:উত্তরা পূর্ব থানা কর্মিসভায় আমিনুল হক পারিবারিক কলহের জেরে আপন ভাই কর্তৃক জলিল হত্যা মামলার পলাতক আসামি সাগর (২০) কে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ ও র‍্যাব-৭ লাখো মুসল্লির অশ্রু সজল নয়নে আমিন-আমিন ধ্বনীতে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিন দিনের ইজতেমা কালীগঞ্জে ফেন্সিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী জামিনী কান্ত, গ্রেফতার  ২৯০০ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ডিবি-গুলশান সিভিল এভিয়েশন একাডেমিতে ICAO CAA Approval of Training Organizations (ATO) Course এর সমাপনী অনুষ্ঠিত খুলনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে একজন নিহত ঢাকায় ১৯ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে দাওয়াতে ইসলামীর ইজতিমা উত্তরা প্রেসক্লাবের আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত দক্ষিনখানে রাজউকের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ভবন নির্মাণ করছে মধ্য আজিমপুরের ইসলাম বোখারী রোডে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ

কলংকের সুন্দর দর্শন-সুপার হিরো

আমিনুল ইসলাম শাওন

সারাদেশ ২৪ ডট কম 

ছবি মুক্তির দুদিন আগেও অনিশ্চিত ছিল মুক্তি পাবে কিনা অথচ তাৎক্ষণিক খবরে উল্লাসে মেতে উঠে সিনেমা প্রেমিরা। খবর প্রকাশ হয় মুক্তির প্রায় ৪৮ ঘন্টা আগে এবারের ঈদে আসছে সমালোচিত আলোচিত সিনেমাটি।  বলছিলাম  সুপার হিরোর কথা।  ঈদ বিনোদনে সিনেমা বাজারে প্রতিযোগিতায় কিনা ১ নাম্বারেই চলে এল কলংকে জড়ানো ছবিটি!

দেশীয় চলচ্চিত্রের সব থেকে বড় প্রযোজনা সংস্থার চলচ্চিত্র সুপার হিরো।  হার্টবিট এবারই প্রথমবারের মত ঈদ আয়োজনে হাজির হয়েছেন তরুণ শিল্পীদের নিয়ে। ঢালিউড সিনেমার অন্যতম মেধাবী ও প্রযুক্তিনির্ভর নির্মাতা আশিকুর রহমানের চার নম্বর ছবি সুপার হিরো।  শাকিব খান, বুবলির সাথে সহ শিল্পী হিসেবে ছিলেন শক্তিমান অভিনেতা তারিক আনাম খান,  মার্গারেট জি রোলিং, টাইগার রবি,  বড়দা মিঠু,  সাদেক বাচ্চু প্রমুখ। ইকবাল মাহমুদ সামি হয়ে পর্দা কাপিয়েছেন শাকিব খান যিনি ছিলেন স্পেশাল ফোর্স কমান্ডার অফ বাংলাদেশ।  গুপ্তচরের ভূমিকায় নায়িকা বুবলি ছিলেন গুপ্তচর ও এম্বাসির একজন কর্মকর্তা। তবে পর্দায় যার রোল দর্শকদের মাঝে আলাদা আকর্ষণ তৈরি তিনি তারিক আনাম খান।  বৈজ্ঞানিক চরিত্রে নিজের সেরাটাই দিয়েছেন গুণী এই অভিনেতা।  অন্যান্য চরিত্রগুলো ছিল সমানে সমান অভিনয় করেছেন।

কি গল্প নিয়ে সুপার হিরো? হয়তো নামের সাথে হলিউডের সুপার হিরো সিনেমাগুলোর সাথে তুলনা দিয়ে বসবেন না , তবে একেইবারেই যে কিছু হবেনা না, এমনটা না ভাবাই ভাল। এটা কিন্তু বাংলাদেশের সিনেমা।  জানেনই তো,  দেশের সিনেমায় এমন বড় বাজেটে  মার্ভেল এর মত সুপার হিরো ভিত্তিক সিনেমা বানাবে অসম্ভব প্রায়।  প্রায় তিন কোটি  টাকা বাজেটের ছবিটি বাস্তবের সুপার হিরোর গল্পকেই বোঝাতে চেষ্টা করেছেন পরিচালক আশিক।  দেশকে রক্ষা করতে বদ্ধ পরিকর সাহসী যোদ্ধা যিনি কর্ম্রত আছেন স্পেশাল ফোর্সে।  মিসাইল স্পেশালিষ্ট কে এম খলিলের বেশ সুনাম দুনিয়াব্যাপী।  বাংলাদেশের এই বিজ্ঞানী নিজের দেশে আসার পর এয়ারপোর্ট পেরুতেই বিদেশী টেরোরিস্ট চক্রের দেশীয় বাহিনী এয়ারপোর্ট থেকে অপহরণ করা  তাকে।  উদ্ধারের দায়িত্ব কাধে নেন সামী।  একের পর এক অভিযানে চালিয়ে উদ্ধারও করেন তাকে।  কিন্তু থেকে যায় নানা রহস্য।  কে বা কারা,  কেনই বা তাকে অপহরণ করতে চায়?  উদ্দেশ্য,  সফলতা ও হানাহানির ঘটনা জানতেই আপনাদের যেতে হবে সিনেমা হলে।  গল্প এখানেই শেষ করেননি পরিচালক।  প্লট কে সুন্দর করে সাজিয়েছেন তিনি।  সাব প্লটেও মেসেজ দিয়েছেন তিনি ; হ্যা পুরো ছবি দেখতেই হবে।  কেননা  কে এম খলিল ফেরত যাবেন অস্ট্রেলয়া এবং সেখানে প্রশিক্ষণ নিতে নিজেও যাচ্ছেন ফাইটার সামী। সামোর সাথে সীমার পরিচয়,  প্রেম,  রোমান্স,  বিশ্বাসঘাতগতা,  পুনরায় মিলন আর সবই ছিল কে এম খলিলের ল্যাপটপের কোন এক ফোল্ডারে যেখানে ক্ল্যাইম্যাএক্স লুকায়িত।  তবে বাংলা সিনেমার কথিত সেই কিছু ধাচ তো রেখেই দিয়েছেন নায়ক নায়িকার প্রেমে, গল্প শুরু করার খুব অতি পরিচিত প্লট দিয়ে । এদিকে সাইমো কন্ট্রাক্ট কিলার জুনায়েদ,  এনালিসা,  বা স্পেশাল ফোর্সের মহা পরিচালক মিঠু বেশ দক্ষতাত সাথে নিজেদের চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। শাকিব খানের   চর্বিযুক্ত দেহ,  গানের দুর্বলতা,  আইটেম গান ছাড়া বাকী গুলো পাশ মার্ক পেয়ে গেছে। যদিও গল্পে মাঝে মাঝে দুর্বল হয়ে গিয়েছিল,  কিছু যায়গায় টাইট করতে পারলে হয়তো পুরোদমে বছরের সেরা গল্প হত সুপার হিরো।

নির্মাতা প্রসংগে,  ছবির নির্মাণে ত্রুটি ছিল বলেই মনে হয়েছে।  সিনেমাটোগ্রাফি, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, ভি এফ এক্স নিয়ে কিছু না বললেই না।  সিনেমাটোগ্রাফি ছিল মন্দের ভাল যেগুলো পরিচালকের আগের কাজ গুলোর থেকে উন্নত ছিলনা। মনে হয়ে বেশ তারাঘুড়ো করেই কাজটি করেছেন তিনি।  আরো কিছু সময় নিলে হয়তো বেটার ট্রিটমেন্ট পেতে পারতো।  ছবির শক্তিশালী দিক হল এর “ইউনিটি অফ অ্যাকশান”।  লোকেশন ভেরিয়েশন হচ্ছে এসব ছবির বড় গুণ।   তবে  বিশেষ কিছু  দৃশ্যে আশিক ক্যামেরার কাজে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক প্রশংসা পেতে পারে।  দুর্বলতার নিরিক্ষে সব থেকে সস্তা কাজ হয়েছে ভিজুয়াল এফেক্স এর কাজ।   নেতিবাচক কথা সমার্থক শব্দে না লিখেই কেবল সোজা বাংলায় লেখা উচিত যাতে ভুলটা আগামীর জন্যে ভাল ফলাফল নিয়ে আসে। কেননা কলংকের দর্শন যদি সুন্দর হয় তাহলে সেই কলংকে বাধা কোথায় ?

গল্পের গতি,  টুইস্ট,  কনফিউশন অন ভিউয়ার্স মাইন্ডই দর্শকদের আটকে রাখবে সিনেমা হলে।  এ যাত্রায় বৈজ্ঞানিক শক্তি প্রয়োগ ছাড়াই হিরোর শক্তি দেখালেও আগামীতেতে যে এর থেকে সহজ কিছু দেখবেন না দর্শক সেদিকেও নজর দিতে হবে নির্মাতাকে। আপাতত প্রশ্নবোধক ! হবে তো সুপার হিরো ২ ?

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন