December 23, 2024, 4:45 pm
নিজস্ব প্রতিবেদক,কুড়িগ্রামঃ এক মুঠো রোদ্দুর আর এক চিমটে হাসি, মানব সেবার চেয়ে বড় আছে কি, মানবতার সেবায় আলো ছড়াচ্ছে কুড়িগ্রামের কচাকাটা এলাকার শিক্ষা পরিবার ও সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “দুধকুমার ফাউন্ডেশন”।
‘আসুন বদলে যাই বদলে দেই’ স্লোগানে ‘দৃষ্টিভঙ্গি বদলান বদলে যাবে’ সব এমন প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি। কুড়িগ্রামের কচাকাটা থানার পাঁচটি ইউনিয়ন কেদার ,কচাকাটা ,বল্লভেখাস, নারায়ণপুর এবং বলদিয়া ইউনিয়নে বসবাসকারী মানুষের সার্বিক সেবায় ব্রত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির ।
সংগঠনটির নামকরণ করা হয় এই এলাকার ইতিহাসের পাতায় আবহমন কাল ধরে বয়ে চলা স্রোতস্বিনী দুধকুমার নদীর নামের সাথে মিল রেখে। কেননা পৃথিবীতে যত সভ্যতা গড়ে উঠেছে তার অধিকাংশ গড়ে উঠেছে জলরাশির উপত্যকায়। নদী বেষ্টিত জনগোষ্টির মৌলিক অধিকার সঠিক ভাবে পাওয়ার জন্য পূর্ব দুধকুমার নিয়ে গঠিত কচাকাটা থানাকে উপজেলা বাস্তবায়নের জন্য নানাবিদ অনুষ্ঠান ও চিঠি পত্রের মাধ্যমে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সংগঠনটি।
জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান এস এম আতাউর রহমান ও নির্বাহী পরিচালক এস এম রুহুল আমিন মানবিক ও সামাজিক কাজে ব্রত হয়ে ১ জুলাই ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন দুধকুমার ফাউন্ডেশন। শুরুতে স্থানীয় উদ্যমী ও স্বেচ্ছায় মানব সেবায় আগ্রহী কয়েকজনকে নিয়ে শুরু করেন সেবামূলক কাজের। পরে ধীরে ধীরে স্থানীয় মানুষের চাওয়া-পাওয়ার এক ভরসার নাম হয়ে ওঠে এই সংগঠনটি। শুরু হয় নতুন করে এবং আরো ব্যাপকভাবে সংগঠনের কার্যক্রম। যুব সমাজকে সভ্য ও সুষ্ঠু সংস্কৃতিতে ফিরে আনতে তৈরি করেন একটি ফুটবল ক্লাব, যার নাম দেয়া হয় শেখ আকিব স্পোর্টিং ক্লাব ,যেখানে উঠতি ও তরুণ বয়সের ফুটবলারদের দেয়া হয় সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা । ইতিমধ্যে ক্লাবটি খেলাধুলায় সুনামের সাথে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে, অবহেলিত এই এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশে প্রতিষ্ঠিত করেন “কচাকাটা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ( কেআইটি), যেখানে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার শিক্ষায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়, অবহেলিত এই এলাকার মানুষের বিনোদনে কাজ করে এই সংগঠনটি, প্রতিষ্ঠিত করে “কচাকাটা থানা শিল্পকলা একাডেমি” যেখানে স্থানীয় প্রতিভাবান ভবন শিল্পীরা প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পায়, জ্ঞান অর্জনে বই পড়ার বিকল্প নেই তাই পাঠক পাঠিকাদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন পুর্ব দুধকুমার পাড় তথা কচাকাটা থানার প্রথম গণ পাঠাগার ” কচাকাটা পাবলিক লাইব্রেরী” নামক আলোর বর্তিকা। যেখানে সময় পেলেই বইপ্রেমীরা ছুটে আসেন বই ও পত্রিকা পড়ে জ্ঞানার্জন করে থাকেন। এসব শিক্ষা ও সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের সাথে নিরলস ভাবে কাজ করছেন ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মাওলানা এস এম জহুরুল ইসলাম, কচাকাটা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, কবি ও সাংবাদিক আব্দুস সালাম, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা নাট্যজন কাজী দীল মোহাম্মদ, শিক্ষা অফিসার মিসেস আল্পনা সরকার, প্রভাষক কাজী নজরুল ইসলাম, শিক্ষক শরিফুল ইসলাম মোল্লা রাজু, ব্যাংকার নাজমুল হুদা মিলন, সাংবাদিক নুর নবী সরকার, শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান রন্জু, সরকারি কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা, ব্যবসায়ী, আমির হোসেন, মোস্তফা কামাল শাহীন, মোর্শেদ আলম, আলতাফ হোসেন মোল্লা জহুরুল ইসলাম, সামিনুর রহমান, রবিউল ইসলাম বিদ্যুত, বেলাল হোসেন, রেজাউল হক মোল্লা,আনিসুর রহমান প্রমুখ। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমাজ সচেতনতা ও করনীয় নিয়ে কাজ করছে কচাকাটা পাবলিক লাইব্রেরি।
এলাকার অসহায়, অসচ্ছল ও গরিব মানুষের সেবায় পারিবারিক ব্যবসা ও পরিবারের কতিপয় চাকুরিজীবীর বেতনের উৎস হতে সংগৃহীত অর্থ ও তহবিল হতে প্রতিনিয়ত করছেন সাহায্য সহযোগিতা, সংগঠনটির কর্ণধার এস এম আতাউর রহমান স্থানীয় বেকার যুবকদের জন্য প্রতিনিয়ত করছেন নিত্যনতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি, বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন উপায়ে বেকার যুবকদের সক্রিয় রাখছেন কর্মক্ষেত্রে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা সহায়তা, এছাড়াও ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কেদার ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বাহের কেদার এলাকায় স্থানীয় লোকজনকে সাথে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন “জান্নাতুল বাকি” কবরস্থান, কবরস্থান সংলগ্ন নুরানি হামিদিয়া মাদ্রাসার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে ফাউন্ডেশনটি। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা ও অসুস্থ রোগীর চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করছেন নিয়মিত ভাবে। শীতের সময় শীত বস্ত্র বিতরন, বন্যার সময় ত্রান, ইদের সময় ইদ সামগ্রী উপহার প্রদান করেন সংগঠনটি। এছাড়াও বিভিন্ন জাতীয় দিবস গুলোতে স্মৃতি স্তম্ভে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, পাবলিক লাইব্রেরিতে আলোচনা সভা করে থাকেন নিয়মিত। শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান ও স্থানীয় জনগণকে সাংস্কৃতিক আনন্দ দিতে আয়োজন করা হয় শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
ভবিষ্যতে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শিক্ষা বিস্তার ও কর্ম সংস্থান করার জন্য প্রতিষ্ঠা করবেন আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, সব শ্রেণীর মানুষকে কাজে লাগাতে প্রতিষ্ঠা করবেন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মত প্রতিষ্ঠান। সবার দোয়া ও ভালবাসা থাকলে আরো কাজ করবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এস এম আতাউর রহমান
এমতাবস্থায় দুধকুমার ফাউন্ডেশন কচাকাটার আলোকদ্যুতি ছড়ানো কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ হচ্ছে কচাকাটা থানাবাসী, তাই সকল শ্রেণী,পেশা, ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে সব বয়সের মানুষ ফাউন্ডেশন টির উত্তোরত্তর সমৃদ্ধি ও সফলতা কামনা করছেন। এগিয়ে যাচ্ছে দুধকুমার ফাউন্ডেশন, এগিয়ে যাক আরো বহুদূর,জয় হোক মানবতার।